পুরোনা নিয়‌মে ভাতা ও পেনশন সু‌বিধা বহাল রাখার দা‌বি‌তে করা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। আজ বুধবার দুপুর পৌনে দুইটায় সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রেলের রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. রফিক চৌধুরী। 

এর আগে রানিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করতে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, রেলের মহাপরিচালক ডিএন মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তখন রানিং স্টাফদের ভাতা বাতিলের ঘোষণা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী। 

দুপুর ১২টায় নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, রানিং স্টাফদের ভাতা পেনশনে যোগ হওয়ার বিষয়ে আগামী ১৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসব। এছাড়া আমরা রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবারও চিঠি পাঠাব।

রেলমন্ত্রী বলেন, রেলের রানিং স্টাফদের দাবির সঙ্গে আমরা একমত। তাদের দাবি আদায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু গত ১০ এপ্রিল রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে রানিং ভাতা, পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছিল অর্থ বিভাগ। বেসামরিক কর্মচারীদের পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের ক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে কোনো প্রকার ভাতা যোগ করার সুযোগ না থাকায় অর্থ বিভাগ এই অসম্মতি জানায়। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘটে বসেন রেলওয়ে স্টাফরা। এতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। 

ট্রেন চালকদের দাবি, নির্দিষ্ট আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে যে অতিরিক্ত ভাতা (মাইলেজ) দেওয়া হয়, সেটা যেন সুনির্দিষ্টভাবে সরকারের পক্ষ থেকে একটি নীতিমালা করে পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

রানিং স্টাফরা দিনে ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ মাইলেজ ভাতা পান, যার ৭৫ শতাংশ পেনশনে যোগ হয়। ১৬০ বছর ধরে এ নিয়ম চলে আসছে। কিন্তু গত বছরের ৪ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো জানায়, আইনানুযায়ী এই ভাতা পেনশনে যোগ করা সম্ভব নয়। তখন থেকেই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রানিং স্টাফরা। গত ৩০ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল। তখন রেল সচিবের সঙ্গে তাদের বৈঠক হলে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। রানিং স্টাফ বলতে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটি) বোঝানো হয়।