অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কর্নেল (অব:) মো. শহীদ উদ্দীন খান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অন্য তিন আসামি হলেন, শহীদ উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আঞ্জুম খান, মেয়ে শেহতাজ মুনাসী খান ও পারিসা পিনাজ খান।

কর্নেল শহীদ উদ্দীন খান ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অষ্টম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। ২০১০ সালে সেনাবাহিনীর কর্নেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। বর্তমানে স্ত্রী, সন্তানসহ যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বিদেশ থেকে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করতে কমিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সরকারের অন্য কোন কোন সংস্থার মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করবে। আসামি শহীদ উদ্দীন দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে স্ত্রী ও সন্তানদের নামে রেখেছেন বলে জানান।

এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ৪০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অনুসন্ধানে শহীদ উদ্দীনের স্ত্রী ফারজানা আঞ্জুম খানের নামে ৭৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নামে মোট ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। কিন্তু এসব সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে বৈধ উৎস্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করাটাও অস্বাভাবিক।

শহীদ উদ্দীনের স্ত্রীর নামে বারিধারা ডিওএইচে বাড়ি, ঢাকা সেনানিবাসে ৭৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, শহীদ উদ্দীনের নামে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা, স্ত্রী ফারজানা আঞ্জুম, কন্যা শেহতাজ মুনাসী ও পারিসা পিনাজের যৌথ নামে ২৬ কোটি টাকা, নিজ ও স্ত্রীর যৌথ নামে ৪ কোটি ২৪ লাখ ১১ হাজার টাকা, স্ত্রীর একক নামে ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা, কন্যা শেহতাজ মুনাসীর নামে ১ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার টাকা, কন্যা পারিসা পিনাজের নামে ৪০ লাখ ৯৭ হাজার টাকার সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এছাড়াও তাদের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শেয়ার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।