- বাংলাদেশ
- সুপ্রিম কোর্ট বারের ফলাফল প্রত্যাখান বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের
সুপ্রিম কোর্ট বারের ফলাফল প্রত্যাখান বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচনে সম্পাদক পদে আবদুন নুর দুলালকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এনেক্স ভবনের নিচতলায় ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা দুলালকে প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি এই নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত আগের কমিটিকে নতুন করে ফল ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।
আগের দিন বুধবার রাতে ভোট ‘পুনর্গণনা’ করে এ ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত নতুন উপ-কমিটির প্রধান আইনজীবী মোহাম্মদ অজিউল্লাহ। এতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের আব্দুন নুর দুলালকে সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
রাত ১০টার দিকে ঘোষিত ফলাফলে সভাপতি মোমতাজউদ্দিন ফকির ও সম্পাদকসহ সাতটি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে দুই সহ-সম্পাদকসহ ৭টি পদে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণার সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন না।
সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগের আব্দুন নুর দুলাল পান ২ হাজার ৮৯১ ভোট। অপরদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল পেয়েছেন ২ হাজার ৮৪৬ ভোট। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত আগের সাব কমিটির গণনায় সম্পাদক কাজল ৩৯ ভোটে এগিয়ে ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় গত ১৫ ও ১৬ মার্চ। এরপর আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নুর দুলালের আপত্তিতে ফল ঘোষণা ঝুলে যায়। প্রাথমিক ফলে পিছিয়ে থাকা দুলাল ভোট পুনর্গণনার আবেদন করেছিলেন। এরপর নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত উপ-কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান পদত্যাগ করেন। ফলে রেজাল্ট ঘোষণা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে গত ১২ এপ্রিল সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্বে সাত সদস্যের নতুন একটি নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সমর্থকরা।
বুধবার নতুন উপ-কমিটি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের বাধা উপেক্ষা করে সমিতির সম্মেলন কক্ষের তালা ভেঙে ঢুকে ভোট ‘পুনর্গণনা’ করে দুলালকে বিজয়ী ঘোষণা করে। এর আগে বিকেলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোল হয়।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বাবের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফলাফল ঘোষণার মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যে অনভিপ্রেত আচরণ করা হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে এই কোর্টের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে লঙ্ঘন করে নজিরবিহীনভাবে সন্ত্রাসী এবং অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করে এই অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি আব্দুন নূর দুলালের অবৈধ প্রক্রিয়ায় বারের সেক্রেটারি কক্ষ দখলকে প্রত্যাখ্যান করা হয়।
বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রধান বিচারপতির কাছে আমাদের দাবি, ঈদের পর কোর্ট খোলার আগেই বিশেষ ব্যবস্থা নেবেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। পাশাপাশি যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের পুনর্বহালের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানান তিনি।
মন্তব্য করুন