অবৈধভাবে তেল মজুত ও বেশি দামে বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে বুধবারও অভিযান চালানো হয়েছে। এদিন সারাদেশে প্রায় এক লাখ ৮১ হাজার লিটার মজুত তেল উদ্ধার করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ৫৮টি টিম। এসব তেল উদ্ধার করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। এ সময় মজুতকারীদের সাত লাখ ৮৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বাজার তদারকির পাশাপাশি ভোজ্যতেলের মজুতদারদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। তিনি জানান, গতকাল থেকে দায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িক বন্ধ করা শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে মামলাও করা হবে।

এর আগে মঙ্গলবার পৌনে দুই লাখ লিটার তেল জব্দ ও সাড়ে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তেলের বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

গতকাল সিরাজগঞ্জের বেলকুচির মুকুন্দগাতি বাজারের রায়হান স্টোরে দুই হাজার লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল মজুত করার অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে প্রতিষ্ঠানটি সাময়িকভাবে সিলগালা করা হয়।
চট্টগ্রাম নগরের কর্নেলহাটের জামাল অ্যান্ড ব্রাদার্স ও বিনিময় স্টোরে অভিযান চালিয়ে কেজিতে ৫০ টাকা বেশি নেওয়ার অপরাধে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাদের সংরক্ষণে ছিল ৪ হাজার ১৩০ লিটার তেল।
সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান সাকার মোড়ের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও সুলতানপুর বড় বাজারে অভিযান চালিয়ে ৯৭৪ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়। পরে দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিককে জরিমানা করা হয় এক লাখ টাকা।
সিলেট নগরীর কাজীটুলা এলাকার একটি বাসায় এবার অবৈধভাবে মজুত করে রাখা ৪ হাজার ৭৫৫ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কাজীটুলার উচা সড়কের 'রাবেয়া খাতুন মা মনি' নামে বাসায় এ অভিযান চালানো হয়।

অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুত ও মূল্য বেশি নেওয়ায় রাজশাহীর দুই ব্যবসায়ীকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নগরীর ফুদকীপাড়া ও পুঠিয়ায় এসব অভিযান চালানো হয়। ফুদকীপাড়ায় এম জেড এন্টারপ্রাইজ নামে ফ্রেশ কোম্পানির ডিলার শামসুজ্জামানের গুদামে গেলে তিনি মাত্র তিন লিটার সয়াবিন তেলের তিনটি বোতল দেখান। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে আরও ২৯টি বোতল পাওয়া যায়। তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে মহিমা স্টোরের মালিক কামাল হোসেনের দোকানে ৪২৭ লিটার সয়াবিন তেল মেলে। তাকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নাটোরের বড়াইগ্রামে পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়নের গুদাম থেকে তিন হাজার লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। মেসার্স নয়ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ওই গুদামে এ অভিযান চলে। প্রতিষ্ঠানটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় পাশের মামুন স্টোরকে একই অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৯ কার্টন তেল উদ্ধার করে খোলাবাজারে বিক্রি করা হয়।

বাগেরহাটে ৫ হাজার ২০০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শহরের নাগেরবাজার ও তেলপট্টি এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। অবৈধভাবে মজুতের দায়ে তিন ব্যবসায়ীকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মেসার্স বদরুল ইসলামের গুদাম থেকে ২০০ লিটার তেল উদ্ধার ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। খুলনা বড়বাজারের ইলিয়াস স্টোরকে বেশি দামে তেল বিক্রি করায় জরিমানা করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।
রংপুরে দুটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং উদ্ধার করা হয় ৫১ হাজার ২০৪ লিটার তেল। বরগুনার পাথরঘাটায় বেশি দামে বিক্রি করায় পরিবেশকসহ দোকানিকে জরিমানা করা হয় ২৫ হাজার টাকা। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রায় ৫০০ লিটার তেল জব্দ ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও রহনপুরে ২৫ হাজার ৪৬৮ লিটার তেল জব্দ, কুমিল্লার তিতাসে একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে দুই প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও ১২ হাজার ৬৪৮ লিটার তেল জব্দ করা হয়।





বিষয় : ভোজ্যতেল জব্দ

মন্তব্য করুন