সব প্রকল্পে বিলম্ব, বাড়ছে অতিরিক্ত খরচ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নির্ধারিত সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি সময় নিয়ে সরকারি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন,  এসব প্রকল্পের ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ  ব্যয় করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন কোনো প্রকল্প শুরু করি, এটা সাধারণত ঠিক সময়ে শেষ হয় না। আমার কাছে অনেক উদাহরণ আছে, প্রকল্প তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও লেগেছে ১০ বছর।আমাদের সব প্রকল্পে বিলম্ব আর বিলম্ব এবং ব্যয় সমন্বয়ের কারণে সরকারি অর্থ অতিরিক্ত খরচ হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউনের উপস্থিতিতে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকায় কোরীয় দূতাবাস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট এশিয়া স্টাডি সেন্টার যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন ও ইস্ট এশিয়া সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন।

বিলম্ব এবং বাড়তি খরচ এড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া আদান-প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে বিশ্বে এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে। আমি আমাদের দক্ষিণ কোরীয় বন্ধুদের অনুরোধ জানাই, আমাদের সাথে ওই পন্থা ও প্রক্রিয়া আদান-প্রদান করুন, যাতে প্রকল্পগুলো ও ঠিকাদারি কাজ ঠিক সময়ে শেষ হতে পারে।

প্রকল্প শেষ হওয়ার আগে পরিচালক পরিবর্তন না করার পাশাপাশি দেশটিতে ঠিক সময়ে প্রকল্প শেষ হলে কর্মকর্তাদের পদোন্নতি এবং বিলম্বের জন্য জেল দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। 

বৈশ্বিক এ সূচকে ১৭৬তম অবস্থান থেকে আট ধাপ এগিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের ১৬৮তম হওয়ার কথা উল্লেখ করে আরও উন্নতির জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মিয়ানমারের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়েও সহযোগিতা চান তিনি।

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমারের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। গত কয়েক বছরে মিয়ানমারে তাদের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ। নিবিড় সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি বাড়তি পদক্ষেপ ও সক্রিয় কার্যক্রম নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে।

দু’দেশের সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আমাদেরকে আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। তবে এই চ্যালেঞ্জগুলোকে আমরা নিবিড়ভাবে গ্রহণ করে আমরা এটাকে নতুন নতুন সুযোগে পরিণত করতে পারি।

কোরিয়ার নতুন সরকার দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির ঘোষণা দেবে বলে মন্তব্য করেন দক্ষিণ কোরীয় রাষ্ট্রদূত।