- বাংলাদেশ
- সৎবাবার হাতে শিশু খুন, স্বামীকে আইনি ঝামেলার বাইরে রাখতে চাচ্ছিলেন মা
সৎবাবার হাতে শিশু খুন, স্বামীকে আইনি ঝামেলার বাইরে রাখতে চাচ্ছিলেন মা

প্রতীকী ছবি
প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ছয় মাস আগে তাসলিমা জাহান ইমাকে বিয়ে করেন রেডিসন হোটেলের শেফ আজহারুল ইসলাম। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো থাকলেও তিনি স্ত্রীর আগের পক্ষের সন্তান নামিরাকে মেনে নিতে পারছিলেন না। তিন বছর বয়সী শিশুটিকে তিনি প্রায়ই মারধর করতেন। বৃহস্পতিবার দুপুরেও তেমনি চড়-থাপ্পড় দেন। রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনার বাসায় এই নির্যাতনে শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।
দক্ষিণখান থানার ওসি মামুনুর রহমান সমকালকে বলেন, শুরু থেকে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে দাবি করে আসছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু সামান্য মারধরে শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়ায় পুলিশ খোঁজ নেয়। দেখা যায়, শিশুটির শরীরের কিডনির অংশে আঘাত রয়েছে। পরে স্বামী-স্ত্রীকে থানায় নিয়ে ১০ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। একপর্যায়ে তারা মূল ঘটনা স্বীকার করেন। আসলে ইমা সন্তান হারানোর শোক চাপা দিয়ে স্বামীকে আইনি ঝামেলার বাইরে রাখতে চাইছিলেন। যদিও শেষপর্যন্ত তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে সম্মত হয়েছেন।
দক্ষিণখান থানা পুলিশ জানায়, আশকোনার আইডিয়াল একাডেমির পাশের একটি বাসায় থাকেন ওই দম্পতি। শিশুটির মা ইমাও রেডিসন হোটেলের অন্য শাখায় কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য উত্তরায় যান। বাসায় ছিলেন সৎবাবা আজহারুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি নামিরাকে চড়-থাপ্পর ও খামচি দেন। এর একপর্যায়ে শিশুটির মাথা খাটের সঙ্গে লেগে মারাত্মক আঘাত পায়। সে আহত হওয়ার পর গৃহকর্মী ইমাকে ফোন করলেও তিনি ধরতে পারেননি। পরে বিকেল ৪টার দিকে ফিরে তিনি সন্তানকে গুরুতর অসুস্থ দেখতে পান। তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তখন প্রথমে তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে আরও একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে রাত ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
দক্ষিণখান থানার এসআই রেজিয়া খাতুন সমকালকে জানান, হত্যায় অভিযুক্ত সৎবাবা আজহারুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, শিশুটিকে তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে মানসিক অশান্তিতে ছিলেন। তাই ক্ষোভ থেকে শিশুটিকে মারধর করেন। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজহারুলকে শনিবার আদালতে হাজির করা হবে।
মন্তব্য করুন