- বাংলাদেশ
- মহাকালের দ্যুতিময় মহিরুহ আনিসুজ্জামান
দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
মহাকালের দ্যুতিময় মহিরুহ আনিসুজ্জামান

মহাকালের দ্যুতিময় মহিরুহ, বাঙালি মনীষার পথিকৃৎ জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আজ ১৪ মে শনিবার বাংলা ও বাঙালি মননের এই উজ্জ্বল ধ্রুবতারার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২০ সালের এই দিনে বরেণ্য এই গুণীজন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতা, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং প্রোস্টেট ও রক্তে সংক্রমণের সমস্যায় আক্রান্ত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ মে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, ভাষাসংগ্রামী, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী, সংবিধানের বাংলা অনুবাদক, স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবর্তী মানুষ আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে। তাঁর মা সৈয়দা খাতুন, বাবা এটিএম মোয়াজ্জেম।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আনিসুজ্জামান প্রথম বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে ভূমিকা রাখেন। তিনি শরণার্থী শিক্ষকদের সংগঠন 'বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি'র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত গণআদালতে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সর্বশেষ তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
'মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য'সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের রচয়িতা আনিসুজ্জামান ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে একুশে পদক, ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার এবং ১৯৯৩ ও ২০১৭ সালে আনন্দবাজার পত্রিকা প্রবর্তিত 'আনন্দ পুরস্কার' পান। এ ছাড়া তিনি অর্জন করেন ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা 'পদ্মভূষণ'। ২০১৮ সালের ১৯ জুন সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপকের স্বীকৃতি দেয়।
কর্মসূচি :জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চন্দ্রাবতী একাডেমি আজ শনিবার বিকেল ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে তাঁর স্মরণসভা ও আলোকচিত্রগ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ সময় কবি মারুফুল ইসলাম সম্পাদিত আলোকচিত্রগ্রন্থ 'আমার মুক্তি আলোয় আলোয়' প্রকাশ করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ। সভাপতিত্ব করবেন সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
মন্তব্য করুন