- বাংলাদেশ
- ২০ থেকে ৪৫ বছরের রোগীরা ভুগছেন পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহে: বিএসএমএমইউ
২০ থেকে ৪৫ বছরের রোগীরা ভুগছেন পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহে: বিএসএমএমইউ

দেশে তরুণ ও মধ্যবয়স্করাই পেটের প্রদাহজনিত রোগ বা আইবিডিতে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায়। যাদের বয়সসীমা ২০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার সকালে ‘আইবিডি এক্সপ্রিয়েন্স ইন বিএসএমএমইউ’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও আইবিডি ফ্রি ট্রিটমেন্ট ক্লিনিকের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ। তাতে তিনি এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, পেটের প্রদাহজনিত রোগ বা আইবিডি বলতে দুটি আলাদা রোগ আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রোনস ডিজিজকে বোঝায়। এ পাঁচ বছরে ৬১৭ জন রোগী নিবন্ধিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৯০ জন ক্রোনস ডিজিজ ও ৩২৭ জন আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগী রয়েছেন। মোট রোগীর ৬০ শতাংশ পুরুষ ও ৪০ শতাংশ নারী। রোগীদের প্রায় সবাই ২০-৪৫ বছর বয়সী। অর্থাৎ তরুণদের মধ্যে রোগটির প্রকোপ বেশি।
তবে একেবারে কম বয়স থেকে শুরু করে ৯০ বছর বয়সিদেরও এ রোগ হতে পারে।।
শহরের লোকজনের মধ্যে রোগটির প্রকোপ একটু বেশি হলেও গ্রাম ও শহরের মানুষের মধ্যেই এ রোগের প্রবণতা কাছাকাছি। শ্রেণি বিবেচনায় গরিব ও ধনী রোগী সমান।
পেটের প্রদাহজনিত রোগের কারণগুলোও উঠে আসে এই প্রতিবেদনে।
বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে বলা হয়, আইবিডি বা ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিসিস হচ্ছে পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহজনিত দীর্ঘমেয়াদী রোগ। এটি প্রধানত দুই ধরনের তা হলো আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রোনস ডিজিস। আলসারেটিভ কোলাইটিস শুধুমাত্র বৃহদন্ত্রে হয়ে থাকে। আর ক্রোনস ডিজিস মুখ থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত পরিপাকতন্ত্রের যে কোনো স্থানে হতে পারে।
দৈনন্দিন খাবারে শাকসবজি ও ফলমূলের স্বল্পতা, ফাস্টফুড গ্রহণ, অপরিষ্কার পরিবেশে খাবার গ্রহণ, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, শারীরিক পরিশ্রম কম করা, স্থূলতা, অল্প বয়সে অতিমাত্রায় এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার, ধূমপান আইবিডি রোগের প্রধান কারণ।
অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ বলেন, বাংলাদেশে জনসচেতনতার অভাবে আইবিডি রোগ বিলম্বে শনাক্ত হয়। যেমন ক্রোনস ডিজিসের ক্ষেত্রে ৪ বছর এবং আলসারেটিভ কোলাইটিসের ক্ষেত্রে দেড় বছর পর রোগী জানতে পেরেছেন যে তিনি আইবিডি রোগে আক্রান্ত। কিন্তু যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করার জন্য এই রোগটি আগেভাগেই চিহ্নিত হওয়া উচিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগে ১৯৯০ সাল থেকে নিয়মিত আইবিডি রোগী দেখা হয়।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, পেটের প্রদাহজনিত রোগ আইবিডি নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এই রোগে ভুগছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় বিশ্ব আইবিডি দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের উদ্যোগে র্যা লির আয়োজন করা হয়।
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো.আনওয়ারুল কবীরের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. স্বপন কুমার তপাদার, শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. রোকুনুজ্জামান, কলোরেক্টাল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাহাদত হোসেন সেখ, আইবিডি ক্লিনিকের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. চন্দন কুমার রায় প্রমুখ।
মন্তব্য করুন