- বাংলাদেশ
- মৎস্যজীবী লীগ নিয়ে নানা বিতর্ক
মৎস্যজীবী লীগ নিয়ে নানা বিতর্ক

নানা বিতর্কে জড়াচ্ছে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ। বিতর্কিত গার্মেন্টস ব্যবসায়ী তাজরীন ফ্যাশনের মালিক দেলোয়ার হোসেনকে সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি করার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ ছাড়া বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী ও ঢাকার বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিকেও মহানগর কমিটির নেতা বানানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় দলের অন্যতম সহযোগী এ সংগঠনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিব্রত আওয়ামী লীগ নেতারাও। গতকাল রোববার মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের কমিটি নিয়ে যে অভিযোগ ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
১১ মে ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনে দেলোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও আবদুল জলিলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দেলোয়ার ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাে ১১২ জন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি। ওই মামলা চলমান থাকতে দেলোয়ারকে সভাপতি করায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া আবদুল জলিল ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানা বিএনপির সহ-সম্পাদক ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দেলোয়ার ও জলিল এর আগে ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব থাকাকালে অর্থের বিনিময়ে গঠনতন্ত্রবহির্ভূত উপায়ে তিনটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতারা এ বিষয়ে সতর্ক করেন তাঁদের।
১২ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্মেলনে সভাপতি পদে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের নাম চূড়ান্ত করা হয়। যদিও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সুরাহা না হওয়ায় নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। পরে সাত দিনের মধ্যে কমিটি ঘোষণার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও সেটা হয়নি। সভাপতি পদে চূড়ান্ত হওয়া শাহজাহান হাওলাদার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালীর বাসিন্দা; মাঝে-মধ্যে ঢাকা আসেন। এর পরও তাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।
শাহজাহান হাওলাদার দাবি করেছেন, ঢাকার বাসাবো এলাকায় তাঁর বাসা ও বঙ্গবাজারে দোকান রয়েছে। আর ২০০৭ সাল থেকেই মৎস্যজীবী লীগ করে আসছেন তিনি।
২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে মৎস্যজীবী লীগ দলের সহযোগী সংগঠনের স্বীকৃতি পায়। এর আগে ২০০৪ সালের ২২ মে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি আওয়ামী লীগের 'সমমনা সংগঠন' হিসেবে কাজ করে আসছিল। নতুন আঙ্গিকে সংগঠন গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০১৭ সালে সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়। পরে ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে মৎস্যজীবী লীগের 'প্রথম জাতীয় সম্মেলনে' সায়ীদুর রহমানকে সভাপতি ও শেখ আজগর নস্করকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই বছরের ৯ ডিসেম্বর সংগঠনের ১১১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মৎস্যজীবী লীগের কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক সমকালকে বলেছেন, সংগঠনের গঠনতন্ত্রেই অন্য পেশার লোকদেরও কমিটিতে আনা যাবে বলে বলা আছে। আর গঠনতন্ত্র মেনেই সব কমিটি করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন