- বাংলাদেশ
- কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংবাদিক, কলামিস্ট ও ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ। সরাসরি...
Posted by Samakal on Saturday, May 28, 2022
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংবাদিক, কলামিস্ট ও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কফিনে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ।
শনিবার দুপুর ১টার দিকে তার মরদেহ আনা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। পরে সেখানে তাকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। সেখানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত রয়েছেন।
গার্ড অব অনারের সময় বিউগলে যখন করুণ সুর বেজে উঠে, তখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তৈরি হয় শোকাবহ পরিবেশ।
শুরুতে রাষ্ট্রপতির পক্ষে মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম আবদুল গাফফার চৌধুরীর কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবীর আহাম্মদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার পথে আবদুল গাফফার চৌধুরী সবসময় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন।
অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, জাতির দুঃসময়ে তিনি লিখে গেছেন অনবরত। তার কলাম, প্রবন্ধ মুক্তিযুদ্ধের অকাট্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষকদের কাছে। মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তিনি বস্তুনিষ্ঠ ও যৌক্তিক উপায়ে লিখেছেন।
এর আগে শনিবার সকাল ১১টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ২০২ ফ্লাইটযোগে লন্ডন থেকে ঢাকার হজরত শাহজাহাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে তার মরদেহ বাংলাদেশে আসে। একই ফ্লাইটে আসেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা।
সরকারের পক্ষে তার মরদেহ গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তার সঙ্গে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বের পর গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে বিকেল সাড়ে ৩টায়। পরে বিকেল ৪টায় মরদেহ জাতীয় প্রেসক্লাবে আনা হবে। সেখানে সাংবাদিকরা তার মরদেহবাহী কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
১৯ মে ভোরে লন্ডনের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। বরিশালের উলানিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন। স্বাধীনতাযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন তিনি।
মন্তব্য করুন