আশুলিয়া এবং রাজধানীর শাহ আলী এলাকায় আলাদা অভিযান চালিয়ে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশ ১৪ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্রসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

ডাকাতদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশ রোববার আলাদা সম্মেলন করে।

কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি ঢাকার আশুলিয়ায় হানিফ পরিবহন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্টারলাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতিসহ বিভিন্ন সময়ে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গত শনিবার রাতে আশুলিয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তারা হলো ডাকাত সর্দার হীরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ, তার সহযোগী হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা, আরিফ হোসেন, নুর ইসলাম, রাজু শেখ ওরফে রাজ্জাক, রেজাউল সরকার, মো. রতন, শরিফুল ইসলাম, মো. হানিফ এবং নজরুল ইসলাম। র‌্যাব বলছে, তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, আটটি দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তারা বিভিন্ন পেশার আড়ালে ডাকাতি করে।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ২৯ মে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টারলাইন পরিবহনে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় ৮ জুন ডাকাত সদস্য মহব্বত ওরফে রয়েলকে লুণ্ঠিত মালপত্রসহ রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। তাদের সর্দার হীরা শেখের নেতৃত্বে গত এক মাসে তিনটি দূরপাল্লার বাসে ডাকাতি করা হয়। ১১ মে চট্টগ্রাম থেকে বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন এবং ২৫ মে ঢাকা-রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস পরিবহনে ডাকাতি হয়।

র‌্যাব বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছে, তাদের দলের সদস্য ১২-১৫ জন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলামুখী যাত্রীবাহী বাসে উঠে ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা ১০-১৫টি বাসে ডাকাতি করেছে। তিন বছর আগে ঢাকা-দিনাজপুরগামী একটি বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটায় বলে জানায়। ডাকাতি করার পর তারা আবার আশুলিয়ায় ফিরে আসে। বাসা-বাড়িতেও ডাকাতি করে। গ্রেপ্তার সবাই ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলায় ২-৬ বছর মেয়াদে কারাভোগ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হিরা শেখ আগে গার্মেন্ট পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিল। ১০-১২ বছর ধরে ডাকাত দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাতটি মামলার আসমি সে। গ্রেপ্তার হাসান মোল্লার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে ১০টি মামলা আছে। গ্রেপ্তার নুর ইসলাম, হানিফ, আরিফ, শরীফ ও রতন অটোরিকশা চালক ও পিকআপ ভ্যানচালক। এই পেশার আড়ালে ডাকাতি করে। ১০ বছর ধরে ডাকাতি করে আসছে সে।

ডিবির হাতে গ্রেপ্তার ৪: ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিম শাহ আলী থেকে শনিবার আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো আসলামুল হক আসলাম, মকবুল হোসেন ওরফে মঙ্গল হোসেন বাবু, রফিকুল ইসলাম ও হাসান হাওলাদার। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ডাকাতি করা প্রাইভেটকার, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাইয়েস মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

ডিবির উত্তরের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা লেজার লাইট দিয়ে মালবাহী ট্রাকের সামনে সিগন্যাল দেয়। ট্রাক চালক পুলিশি সিগন্যাল ভেবে গাড়ি থামালে অস্ত্রের মুখে চালক ও হেলপারকে জিম্মি করে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে নির্জন স্থানে চালক-হেলপারকে ফেলে দিয়ে ট্রাকে থাকা পণ্য ডাকাতি করে। ডাকাতি করা ওই ট্রাকটি নিয়ে আবার অন্য কোথাও ডাকাতি করে।