- বাংলাদেশ
- বালু উত্তোলন নীতিমালা হচ্ছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
বালু উত্তোলন নীতিমালা হচ্ছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

দেশের নানা প্রান্তে নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে নীতিমালা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
জাহিদ ফারুক বলেন, ‘পরিকল্পনাহীন বালু উত্তোলনের রয়েছে নানা ক্ষতিকর প্রভাব। অবৈধভাবে বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে নদীর তীরের বসতবাড়ী ও ফসলের জমি। সঠিকভাবে বালু উত্তেলন করলে ভাঙ্গন অনেকাংশে কমে আসবে। অতি শিগগির বালু উত্তোলন সংক্রান্ত নীতিমালা মন্ত্রিপরিষদ উপস্থান করা হবে।’
সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাস। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
এসময় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হলে স্থানীয় প্রশাসনকে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। বালুমহল লিজ বা ইজারা দেওয়ার সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামত নেওয়া প্রয়োজন।
জাহিদ ফারুক জানান, ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ৮০ টি কার্যক্রম চিহ্নিত করা হয়েছে যার ৪৫ টি কার্যক্রম এককভাবে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর অর্ন্তভুক্ত ২৫ টি কার্যক্রম ৫০টি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা প্রদানসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও পানি দূষণ কমাতে সক্ষম হবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
ব-দ্বীপ পরিকল্পনার আওতায় ৬৪টি জেলার ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন (প্রথম পর্যায়- প্রকল্পটির আওতায় প্রায় ৫২৬২ কিলোমিটার নদী, খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন করা হচ্ছে। এতে ১০৯টি ছোট নদী, ৫৩৩টি খাল ও ২৬টি জলাশয় পুনরুজ্জীবিত হবে। জলাশয়, খাল ও নদীর মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপিত হবে।
এ প্রকল্পের ৭০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানান জাহিদ ফারুক।
প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬৪টি জেলায় আরও ২ হাজার ৪১৫ টি ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন করা হবে যার দৈর্ঘ্য ১৩ হাজার ৮৪৩ কিলোমিটার। এর ফলে ২১২টি ছোট নদী, ২ হাজার ৪টি খাল ও ১৯৯টি জলাশয় পুনরুজ্জীবিত হবে।
জাহিদ ফারুক বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে আনুমানিক ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর এলাকার জলাবদ্ধতা, বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের ফলে বার্ষিক প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
এসময় প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২ সালের সংঘটিত আগাম বন্যায় হাওরের ৭টি জেলার আওতাধীন ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৬৬ হেক্টর ধানি জমির মধ্যে ৩ হাজার ৩০৩ হেক্টর ধানি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হাওর অঞ্চলে সংস্কার ও মেরামতকৃত ৮৬২ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে মাত্র ৩১৫ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে (সুনামগঞ্জ- ২৮৫ মিটার এবং নেত্রকোনা- ৩০ মিটার)।
সুনামগঞ্জ এলাকায় ১ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪টি নদী খনন এবং বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
জাহিদ ফারুক বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সুনামগঞ্জ এলাকায় আগাম বন্যা হতে ফসলাদি ও জানমালের ক্ষতির পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখলকৃত জায়গা উদ্ধার চলমান রয়েছে। এছারা কোথাও কোথাও কৃষিকাজ ও মৎস্য চাষের জন্য জমি লিজ দেওয়া হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন একই ঠিকাদারের ৫০-৬০ টি কাজ পাওয়ার আর সুযোগ নেই। যারা একাধিক কাজ পেয়েছেন তাদের কাজ শেষ না হলে নতুন করে কাজ দেওয়া হচ্ছে না।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আছে, আমরা আশাবাদি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় কাজ করবে।
মন্তব্য করুন