চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়ার জেরে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার পূর্ব নির্ধারিত ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের দুই পক্ষ নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন হলগুলোতে অবস্থান করছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। দুই পক্ষের সঙ্গে বসে মঙ্গলবার বিবাদ মেটানোর কথা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চুয়েটে ছাত্রলীগের দুইটি পক্ষ রয়েছে। একটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী, অন্যটি সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

শনিবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। থেমে থেমে চলে তা রোববার রাত পর্যন্ত। কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে তড়িৎ কৌশল বিভাগ তৃতীয় বর্ষের নাইমুল আবেদীন রাফসান নামে এক শিক্ষার্থী রয়েছেন। যাকে প্রতিপক্ষের কর্মী মনে করে হামলা করা হয়েছে।

সোমবারও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি ছিল থমথমে। দুই পক্ষ নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন হলগুলোতে অবস্থান নিয়েছে। উপমন্ত্রী নওফেল অনুসারীরা অবস্থান নিয়েছে ড. কুদরত-এ-খুদা হলে, নাছির নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা অবস্থান নিয়েছে শহীদ তারেক হুদা হলে।

এদিকে ক্যাম্পাসে দফায় দফায় হামলা ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়া চলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশের দাবিতে সোমবার ক্লাস বর্জন করেছে তারা। অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় এনে ক্যাম্পাসের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মাসরুর আহম্মদকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ঘটনার নেপথ্যে কারণ ও দায়ীদের শনাক্ত করবেন।

পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, ‘ক্যাম্পাস পরিস্থিতি শান্ত। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সমকালকে বলেন, ‘পুলিশের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কারা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জানি না। তবে শিক্ষার্থীরা সোমবার ক্লাস করেনি। মঙ্গলবার বিবাদমান দুই পক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।’