বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৯২টি দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশেরই চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই। বৈশ্বিক শিক্ষা ও দক্ষতা সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে এ খাতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার ইউনিসেফ ও শিক্ষা কমিশনের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। শুক্রবার 'বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস' উপলক্ষে এটি প্রকাশিত হয়েছে।
শৈশব ও তারুণ্যে দক্ষতা বিকাশের বৈশিষ্ট্য বিশ্নেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সব বয়সের শিশু ও যুবকদের মধ্যেই দক্ষতা নিম্নস্তরের। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর যুবকদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের সম্ভাবনা কম, বিশেষ করে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের সুযোগ, সম্মানজনক কাজ ও উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে থাকা যুবকদের উচ্চহার এবং মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে দক্ষতা কম অর্জনের কারণে বিশ্বব্যাপী দেশগুলো দক্ষতা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে বেশিরভাগ যুবক বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মক্ষেত্রে অংশ নিতে প্রস্তুত নয়। এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিম্ন আয়ের প্রতি ৩ দেশের একটিতে ৮৫ শতাংশেরও বেশি যুবক মাধ্যমিক স্তর, ডিজিটাল ও চাকরির জন্য নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জনের বাইরে রয়েছে।
৭৭টি দেশের তথ্য অনুযায়ী, ৩ থেকে ৫ বছর বয়সীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশেরও কম শিশু সাক্ষরতা, শারীরিক, সামাজিক ও শেখার মধ্যে অন্তত ৩টিতে উপযুক্ত বিকাশ হচ্ছে না। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ১০ বছর বা তা তার কাছাকাছি বয়সের বেশিরভাগ শিশু সাধারণ পাঠ্য পড়তে ও বুঝতে পারে না। এই মৌলিক দক্ষতার অভাব তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা ও দক্ষতা বিকাশে অন্তরায় হয়ে উঠছে।
প্রতিটি শিশুর মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এবং তাদের ঝরে পড়ার ঝুঁকি রোধ করতে প্রত্যেক দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ ও দ্য এডুকেশন কমিশন।
ইউনিসেফের শিক্ষাবিষয়ক পরিচালক রবার্ট জেনকিন্স বলেন, দক্ষ শিশু ও তরুণ প্রজন্ম দেশের সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও আর্থসামাজিক উন্নতির জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়। অথচ শিশু ও তরুণদের বড় অংশ অদক্ষ, যা বিশ্বকে অনুৎপাদনশীলতার দিকে নিয়ে যাবে। এই সংকট সমাধানে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও তাদের দক্ষতা উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে।
দ্য এডুকেশন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক লিসবেট স্টিয়ার বলেন, 'তরুণদের সফল হওয়ার সর্বোত্তম সুযোগ দিতে এবং মহামারির কারণে শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে হবে। তাদের সামগ্রিকভাবে সহায়তা করতে হবে। শিশু ও যুবকরা কোন ক্ষেত্রে দক্ষতা বিকাশের চেষ্টা করছে তা জানা দরকার এবং তাদের অগ্রগতি নিয়মিত দেখতে হবে।