
দেশে চলছে মাছের সুদিন। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় নতুন নতুন জাতের মাছ চাষে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। তখন দেশে ৪১ দশমিক ৩৪ লাখ টন মাছ উৎপাদন হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে যা বেড়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ২১ লাখ টন। মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে মাছের উৎপাদন খরচ বেশি এবং সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধতার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে অনেক প্রজাতির মাছের দাম দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। এদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, মাছের দাম নাগালের মধ্যে আনার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা জরুরি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগ জোগান দিচ্ছে মাছ। মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ মৎস্য খাতের অবদান। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোট মাছ উৎপাদন ছিল ২৭ দশমিক ১ লাখ টন, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ২১ লাখ টন। এর মধ্যে সামুদ্রিক মাছের অবদান ৬ দশমিক ৮১ লাখ টন, যা দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। ২০১৭ সালে 'বাংলাদেশের ইলিশ' ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই সনদ লাভ করেছে। সম্প্রতি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে চিংড়িও।
জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চলতি জুলাই মাসে 'দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার, ২০২২' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ তৃতীয়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম, ইলিশ আহরণে প্রথম এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নানা প্রতিবন্ধকতায়ও চাষের মাছ উৎপাদনে তিনটি দেশ বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম এবং আফ্রিকায় মিশর এই সাফল্য দেখিয়েছে। বিশ্বের স্বাদু পানির মাছের ১১ শতাংশ এখন বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশীয় মাছ সংরক্ষণে এ পর্যন্ত ৩৬ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির দেশীয় মাছের লাইভ জিন ব্যাংকে এখন পর্যন্ত ১০২ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমএ সাত্তার ম ল বলেন, মৎস্য ভোগের দিক থেকে বড় ধরনের বৈষম্য রয়েছে। অসংখ্য দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ রয়েছে। তারা তেমন মাছ খেতে পারছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নিয়ামুল নাসের বলেন, কৃষিকাজে অনেক কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহূত হয়। এসব রাসায়নিক নদীতে আসে। এটা মাছের শরীরেও এসে যায়। সমুদ্রেও দূষণ বাড়ছে। দূষণ কমাতে না পারলে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যাব। ফলে সংশ্নিষ্ট সবাইকে এসব ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, মৎস্য খাদ্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, তা পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার করা হয়েছে। মাছ রপ্তানির জন্য পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে, যাতে বিদেশে পাঠানো মাছের চালান দেশে ফেরত না আসে। দেশের অভ্যন্তরের বাজারেও নিয়মিত তদারক করা হচ্ছে। জলাশয় ও নদনদীর দূষণ কমাতে পারলে উৎপাদন আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
আজ থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু :প্রতি বছরের মতো এবারও 'নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ'- এ প্রতিপাদ্যে আজ শনিবার থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত 'জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ' উদযাপন হচ্ছে। এ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে আজ সকাল ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে র্যালি, সকাল ১০টায় মৎস্য ভবনে মৎস্যমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন এবং বিকেল ৪টায় হাতিরঝিলে বর্ণাঢ্য নৌ র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন এবং সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বঙ্গভবন পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন। ২৭ জুলাই জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ ভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগ জোগান দিচ্ছে মাছ। মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ মৎস্য খাতের অবদান। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোট মাছ উৎপাদন ছিল ২৭ দশমিক ১ লাখ টন, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ২১ লাখ টন। এর মধ্যে সামুদ্রিক মাছের অবদান ৬ দশমিক ৮১ লাখ টন, যা দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। ২০১৭ সালে 'বাংলাদেশের ইলিশ' ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই সনদ লাভ করেছে। সম্প্রতি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে চিংড়িও।
জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চলতি জুলাই মাসে 'দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার, ২০২২' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ তৃতীয়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম, ইলিশ আহরণে প্রথম এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নানা প্রতিবন্ধকতায়ও চাষের মাছ উৎপাদনে তিনটি দেশ বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম এবং আফ্রিকায় মিশর এই সাফল্য দেখিয়েছে। বিশ্বের স্বাদু পানির মাছের ১১ শতাংশ এখন বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশীয় মাছ সংরক্ষণে এ পর্যন্ত ৩৬ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির দেশীয় মাছের লাইভ জিন ব্যাংকে এখন পর্যন্ত ১০২ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমএ সাত্তার ম ল বলেন, মৎস্য ভোগের দিক থেকে বড় ধরনের বৈষম্য রয়েছে। অসংখ্য দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ রয়েছে। তারা তেমন মাছ খেতে পারছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নিয়ামুল নাসের বলেন, কৃষিকাজে অনেক কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহূত হয়। এসব রাসায়নিক নদীতে আসে। এটা মাছের শরীরেও এসে যায়। সমুদ্রেও দূষণ বাড়ছে। দূষণ কমাতে না পারলে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যাব। ফলে সংশ্নিষ্ট সবাইকে এসব ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, মৎস্য খাদ্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, তা পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার করা হয়েছে। মাছ রপ্তানির জন্য পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে, যাতে বিদেশে পাঠানো মাছের চালান দেশে ফেরত না আসে। দেশের অভ্যন্তরের বাজারেও নিয়মিত তদারক করা হচ্ছে। জলাশয় ও নদনদীর দূষণ কমাতে পারলে উৎপাদন আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
আজ থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু :প্রতি বছরের মতো এবারও 'নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ'- এ প্রতিপাদ্যে আজ শনিবার থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত 'জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ' উদযাপন হচ্ছে। এ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে আজ সকাল ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে র্যালি, সকাল ১০টায় মৎস্য ভবনে মৎস্যমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন এবং বিকেল ৪টায় হাতিরঝিলে বর্ণাঢ্য নৌ র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন এবং সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বঙ্গভবন পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন। ২৭ জুলাই জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ ভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন।
মন্তব্য করুন