সিলেটের চা শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্ল্যাকার্ড হাতে শ্রমিকদের দাবির সাথে একাত্মতা জানান তারা।

এ দুই শিক্ষার্থী হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের নাহিদ ফারজানা মিম ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী খবিরউদ্দিন লানচু।

শ্রমিকদের আন্দোলনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে নাহিদ ফারজানা মীম বলেন, 'এই দুর্মূল্যের বাজারে যেখানে জীবন ধারণের জন্য সব দ্রব্যের দাম এত বেশি, সেখানে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা যা নিতান্তই অমানবিক এবং অন্যায্য। চা শ্রমিকদের ৮০ ভাগ নারী শ্রমিক, তারা প্রতিদিন ৮/১০ ঘণ্টা কাজ করে ২৪ কেজি পাতা তোলেন এবং বিনিময়ে পান মাত্র ১২০ টাকা। মালিকপক্ষ মাঝেমাঝে নানান অযুজাতে জরিমানা করে ঐ ১২০ টাকা থেকেও কেটে রাখেন। অনিবন্ধিত চা শ্রমিক পায় সপ্তাহে মাত্র ৯০/১০০ টাকা। 

এসময় তিনি বহির্বিশ্বের চিত্র উল্লেখ করে বলেন, 'নেপালে চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরী ৩২৪ টাকা, কেরালায় ৫০৩ টাকা, কর্নাটকে ৪৪৯ টাকা, শ্রীলঙ্কায় পান ৪১৫ টাকা সেখানে বাংলাদেশে শ্রমিকদের মজুরী মাত্র ১২০ টাকা। দেশ স্বাধীন হইলেও এই রাষ্ট্রে চা শ্রমিকদের অবস্থান আধুনিক কৃতদাসের মত। ১২ দিন ধরে ৩০০ টাকা মজুরীর জন্য শ্রমিকেরা কর্মবিরতি ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ১২ দিনের টানা আন্দোলনের পরেও মালিকপক্ষ নানান অযুহাতে তাদের নায্য দাবিকে মানতে নারাজ। মালিকপক্ষকে তাদের দাবি মানতে হবে। এই আন্দোলন অত্যন্ত নায্য আন্দোলন, আমরা তাদের দাবির সাথে সংহতি জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে এবং সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাদের সাথে ঘটমান অন্যায্যতা ও অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সোচ্চার হওয়া জরুরি।'

অপর আরেক শিক্ষার্থী খবির উদ্দিন লানচু বলেন, 'চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবি খুবই ন্যায়সঙ্গত। মালিকপক্ষ ও রাষ্ট্রকে তাদের দাবি মানতে হবে। কোনোভাবে তাদের আন্দোলন বা ন্যায্য দাবিকে বানচাল করার চেষ্টাকে আমরা ধিক্কার জানাই। চা শ্রমিকদের নোংরা রাজনীতির শিকার না বানিয়ে রাষ্ট্রের উচিৎ তাদের দাবি মেনে নেয়া।'