সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ঘোষণা করা হয়েছে।

বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ২৫ আগস্ট এ রায় দেন। শনিবার দুই বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে ১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের ওই রায় ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (আপিল অনুমতি) আবেদন করতেও বলা হয়েছে।

পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, আমাদের দেশে প্রচলিত রীতি হচ্ছে কোনো ফৌজদারি মামলার তদন্ত শেষ হতে দীর্ঘ সময়, এমনকি বছরের পর বছর লেগে যায়। এ ক্ষেত্রে যদি আইনের এই বিধান (পূর্বানুমতির বিধান) বহাল থাকে, তাহলে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলার তদন্ত কোনো দিন শেষ হবে না।

২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর গেজেট জারি করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অপর এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর করে সরকার। আইনের ৪১(১) ধারায় বলা হয়, 'কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।' 

এ নিয়ে তখন নানা মহলে সমালোচনা দেখা দেয়। এর মধ্যে আইনের ৪১(১) ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২১ অক্টোবর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২৫ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট।