দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যেতে প্রতিবছর অক্টোবরের শুরুতে চালু হয় পর্যটকবাহী জাহাজ। মার্চ পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচল করে ১০টি জাহাজ। তবে নাফ নদে নাব্য সংকটের কারণে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এ নৌপথে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। অবশেষে এই মৌসুমে পর্যটকদের জন্য খুলেছে সেন্টমার্টিনের দুয়ার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজে ৭৫০ যাত্রী সেন্টমার্টিনে যান।

এদিকে, নাফ নদে নাব্য সংকটের কারণে সেন্টমার্টিন যেতে পর্যটকবাহী জাহাজগুলোর জন্য নতুন রুট চালুর দাবি জানিয়েছে সী-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) এবং ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক)। টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন সৈকতে অস্থায়ী জেটি করে জাহাজ চালানোর কথা বলেছে তারা। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তোলা হয়। স্কোয়াব ও টুয়াক এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনসহ সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতাও চেয়েছে।

তারা জানায়, প্রয়োজনে নিজেদের খরচে অস্থায়ী জেটি ও পন্টুন স্থাপন করবে। এটা করা গেলে অল্প খরচ ও সময়ে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সী-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) সভাপতি তোফাইল আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কক্সবাজারে প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণে আসেন। তাঁদের মধ্যে বড় অংশের চাহিদা থাকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। বছরে অন্তত ৩ লাখ পর্যটক টেকনাফ থেকে জাহাজে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান।

আরও জানানো হয়, চট্টগ্রাম বা কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত জাহাজ পরিচালনা করা ব্যয়বহুল। তবে পর্যটকরা চান অল্প খরচে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। এ কারণেই স্কোয়াব ও টুয়াক বিকল্প রুটে জাহাজ চলাচল চাচ্ছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন টুয়াক সভাপতি আনোয়ার কামাল আনু, সাধারণ সম্পাদক মুনিবুর রহমান টিটু, সহসভাপতি ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, অর্থসম্পাদক নুরুল আলম রনি, পার্বত্যবিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তোহা, যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন বিশ্বাস, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এমএ কাজল, আকতার নূর প্রমুখ।

এদিকে, দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে বর্তমানে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার বলেন, ১০ অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের আবাসিক হোটেলগুলোর অধিকাংশ কক্ষ বুক হয়ে গেছে।

রাঙামাটির পর্যটনকেন্দ্রে ভিড়: সাপ্তাহিক ও সরকারি টানা ছুটিতে হ্রদ আর পাহাড়ের শহর রাঙামাটিতে ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকরা। মেঘের রাজ্য সাজেকও পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। শহরের অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের কক্ষ অগ্রিম ভাড়া হয়ে গেছে।

রাঙামাটির অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, শুভলংয়ের ঝরনা, রাজ বন বিহার, বড় গাঙ, জেলা প্রশাসনের বাংলো, বার্গী লেক ভ্যালি, রাঙামাটি-আসাম বস্তি-কাপ্তাই সড়কে ঘোরাঘুরি করছেন পর্যটকরা।

সাজেকের হিল ভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্র চাকমা জানান, ছুটিতে সাজেকে অনেক পর্যটক এসেছেন। বৃহস্পতিবারই ৩ হাজারের বেশি ভ্রমণপিপাসু সেখানে গেছেন। পর্যটকের ভিড় আরও কয়েক দিন থাকবে।