ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, দেশের কোনো জায়গায় যদি অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, অবৈধভাবে মদ বিক্রি হয় অথবা ডিজে পার্টির নামে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, সেখানে পুলিশ অভিযান চালাতে পারে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে নকল মোবাইল ফোন উদ্ধারের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ডিবি প্রধান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। পুলিশ বা অন্যান্য সংস্থা, আমরা সবাই নিয়মিত অভিযান চালাই। আইনগত প্রক্রিয়া মেনেই আমরা কাজটি করে থাকি।

সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরার বারে ডিবির অভিযান নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) বরাত দিয়ে বলা হয়, উত্তরার বারটি বৈধ এবং সেখানে ডিবির অভিযান ছিল এখতিয়ার বহির্ভূত। অভিযানের সময় সেখানে ডিএনসির এক কর্মকর্তাকে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তো আমাদেরই সহযোদ্ধা, সহকর্মী। আমাদের সকলের উদ্দেশ্যই এক। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালাই। তারা তাদের কাজটি করবেন, আমরা আমাদের কাজ করব। রাত ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত যেখানে যেখানে অবৈধ মদ পাওয়া গেছে, অভিযান চালানো হয়েছে। তবে এ ধরনের (ডিএনসি কর্মকর্তাকে আটকে রাখার) কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। 

তিনি বলেন, ডিএনসি কর্মকর্তারা ভালো করেই জানেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় কী বলা আছে।  ২৩ এর ১ ও ২ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, কারা তল্লাশি চালাতে পারবেন, আর কারা পারবেন না। এটা হলো আইনগত বিষয়। এ ছাড়া যেখানে অবৈধ কর্মকাণ্ড হবে, যেখানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে, যেখানে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, অসামাজিক কার্যকলাপ দেখা যাবে, পুলিশ শুধু ঢাকা শহর নয়, বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় অভিযান চালাতে পারে।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, আমরা যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত, আমরা যখন লক্ষ্য করি, ঢাকায় কোথাও কোনো অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, অবৈধ মদ বিক্রি হয় অর্থাৎ অবৈধ কোনো কাজ হয়, সেখানে পুলিশ যেকোনো সময় অভিযান চালাতে পারে। এ কাজটা আমরা সবসময় করে আসছি। এটা আমাদের দায়িত্ব। 

তিনি বলেন, অবৈধ বারের মধ্যে যদি টিনেজ ছেলে-মেয়েরা যায়, সেখানে যদি সারারাত ডিজে পার্টির নামে মদ্যপান করে পরিবেশ নষ্ট করে, এটা আমাদের জন্য আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর। এ কারণে গুলশান-বনানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সুধী সমাজ, এমপি মহোদয়রা আমাদের কাছে এর থেকে পরিত্রাণের জন্য সহায়তা চেয়েছেন। আমরা নিজেরা যেমন অভিযান চালাই, তেমনি আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে সেটাও আমলে নেই। 

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সব জায়গার তথ্য আমাদের কাছে নেই। আপনারাও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করবেন। পাশে থাকবেন, ভালো কাজকে উৎসাহিত করবেন। তাহলে সমাজের দুষ্ট লোকগুলো চার-পাঁচটি বারের লাইসেন্স নিয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ মদ বিক্রি করার সাহস পাবে না।