- বাংলাদেশ
- চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত তারা
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত তারা

সাভারে ভুয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি খুলে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ১৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)।
সোমবার রাতে সাভারের শিমুলতলা সুপার মার্কেটের পাঁচতলা ভবনের চারতলায় অবস্থিত 'জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডে' অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।মঙ্গলবার সকালে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন- এরশাদ শেখ (৩১), নাঈম শেখ (২৬), শহিদুল্লাহ (২৩), ইলিয়াস আহম্মেদ (২৫), জামাল উদ্দিন (৫২), জিয়াউর রহমান (২৫), মহসিন কবির (৪২), কামরুল শেখ (১৯), আজিজুল ইসলাম (২০), হুমায়ূন শেখ (২১), রাহাত ওরফে অনিক (১৯), মাওলানা মাইনুদ্দিন (২৩), বারহাম মিয়া (২০), হিজবুল্লাহ (১৯) ও চাঁন মিয়া (১৯)।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়। এ সময় একটি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ২টি প্রিন্টার, ১৫টি রেজিস্টার, ১৪টি মোবাইল, ১৪টি সিম কার্ড, ৯টি সিল, ৩০টি ভিজিটিং কার্ড, ৪টি আইডি কার্ড, ২টি ব্যানার, ২৫০টি বায়োডাটা ফরম, ২০০টি লিফলেট, ১টি ক্যাশ ভাউচার এবং ৮টি আবেদন ফরম জব্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নামে এ ভুয়া রেজিস্ট্রেশনবিহীন আর্থিক কোম্পানিটি ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। চক্রটির সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
প্রতারণার শিকার কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এ প্রতারক চক্র জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে ফুলটাইম, পার্টটাইম চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে। চাকরিপ্রত্যাশী শত শত বেকার তরুণ-তরুণী ও ছাত্রছাত্রী তাদের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করে। প্রথমে চাকরিপ্রত্যাশী প্রত্যেকের কাছ থেকে তারা রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে ৫২০ টাকা করে নেয়। পরে চাকরির নিশ্চয়তা ও মোটা অঙ্কের বেতনের লোভ দেখিয়ে ১০/২০ হাজার টাকা নিয়ে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করত। ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ১৮ হাজার ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের লোভ দেখিয়ে ইন্স্যুরেন্স করাতে প্রলুব্ধ করত। চাকরি পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা-যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে তাদের টাকা ফেরত চাইলে তাদের ভয়ভীতি, মারধর এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দিত চক্রের সদস্যরা।
মন্তব্য করুন