ঔপনিবেশিক আমলের করা বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনের দুটি ধারায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মামলায় বাদীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বাতিলে সংসদে বিল আনা হয়েছে। এছাড়া মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ আদালতের আমলে নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত এই আইনে।

বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘অ্যাভিডেন্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২২’ উত্থাপন করেন।  ১৮৭২ সালের অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট সংশোধন করে নতুন এই বিল আনা হয়েছে। পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। 

বিদ্যমান আইনের ১৫৫ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারি মামলার আসামি হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা। সংসদে উত্থাপিত নতুন বিলে এই ধারাটি বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আর ১৪৬ (৩) ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, মামলার জেরা চলকালে বাদীর চরিত্র নিয়ে কোন প্রশ্ন করা যাবে না। ন্যায় বিচারের স্বার্থে এমন কোন প্রশ্ন করার প্রয়োজন হলে আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। 

মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা দীর্ঘ দিন ধরে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই ঔপনিবেশিক আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

এছাড়া সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা যুক্ত করে মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। কেউ যাতে ভুয়া বা জাল সাক্ষ্য প্রমাণ ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করতে না পারে, আদালত যদি মনে করে যে কোথাও আপত্তিজনক কিছু আছে, অথবা কেউ যদি আপত্তি তোলে, তাহলে ওই সাক্ষ্য-প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে-বিলে এমন বিধান রাখা হয়েছে।