এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শূন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদ। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ না দেওয়ায় এ শূন্যতা বিরাজ করছে। ফলে চেয়ারম্যান ছাড়াই চলছে এ প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত কার্যক্রম। নতুন কে আসছেন, এ নিয়েও খুব একটা আলোচনা নেই সরকারের সংশ্নিষ্ট মহলের।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক সচিব নাছিমা বেগম এবং সার্বক্ষণিক ও অবৈতনিক ছয় সদস্যের মেয়াদ গত ২৩ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এরপর আর কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদ শূন্য থাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও কমিশনের পক্ষে কোনো বিবৃতি দেওয়া যাচ্ছে না। চেয়ারম্যান, সার্বক্ষণিক ও অবৈতনিক সদস্য না থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কমিশনে আসা অভিযোগ নিষ্পত্তির কাজ গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে কমিশনে আসা

বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তিও বেড়েছে। পাশাপাশি কমিশনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক কাজ আটকে আছে। এতে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ছে রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য

নিয়োগের জন্য গঠিত স্পিকারের নেতৃত্বে বাছাই (সার্চ) কমিটি সুপারিশ পাঠাবে। এরপর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়ে থাকে।

জানা গেছে, সংসদ অধিবেশন শেষ হলে সার্চ কমিটির বৈঠক করা হবে। সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে সার্চ কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, দু'জন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব।

এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সমকালকে বলেন, মানবাধিকার কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদ বেশিদিন শূন্য রাখা সমীচীন নয়। এতে করে দেশের মানুষেরই ক্ষতি হবে।

কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ বলেন, চেয়ারম্যান না থাকায় নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না কমিশন। অনেক কাজ আটকে আছে।

জনবলের অভাব :কমিশনের ১১৬টি পদের মধ্যে ২৭টি পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। সরকার নির্ধারিত বেতন ঠিক থাকলেও কর্মীদের জন্য নেই আর্থিক কোনো সুবিধা। এতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় সৃষ্টি হয়েছে। চারজন পরিচালকের দুটি পদ, সহকারী পরিচালকের ১৯টি পদের ১৮টি, জনসংযোগ কর্মকর্তার একটি পদ, কম্পিউটার অপারেটরের ৯টি পদের চারটি এবং লাইব্রেরিয়ানের একটি পদসহ ২৭ পদে লোক নেই। ফলে কমিশনের অনেক কাজ সময়মতো হচ্ছে না।