হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দকৃত সব হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। হাইকোর্টেল রায়ের বিরুদ্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানি পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে।

আদালতে রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হাসান। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

২০১৮ সালে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টে লে আউট প্ল্যানের নির্দেশনার বাইরে কতিপয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে রাজউকের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ওই বছরই হাইকোর্টে রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। পরে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর ওই রুলের শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৩০ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে বলা হয়, প্রতিটি ফোঁটা পানি অতি মূল্যবান। পানির চেয়ে তথা সুপেয় পানির চেয়ে মূল্যবান আর কোনো সম্পদ এ পৃথিবীতে নেই। সুতরাং প্রতি ফোঁটা পানির দূষণ প্রতিরোধ একান্ত আবশ্যক।

পানির অস্তিত্ব নিয়ে হাইকোর্ট বলেন, দেয়ার ইজ নো ‘প্ল্যানেট বি’। দ্বিতীয় কোনো পৃথিবী নেই। এ পৃথিবী ছাড়া আর কোনো গ্রহে পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায় নাই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে এক ফোঁটা পানি এ পৃথিবীর বাইরে থেকে আনতে সক্ষম হয় নাই। অথচ এ খরচের এক শতাংশ টাকা খরচ করলে আমরা আমাদের গ্রহের পানিকে দূষণমুক্ত রাখতে সক্ষম হবো।

হাতিরঝিলের সৌন্দর্য নিয়ে উচ্চ আদালত বলেন, হাতিরঝিলের পানি এবং এর নজরকাড়া সৌন্দর্য অমূল্য সম্পদ, এ সম্পদকে ধ্বংস বা ক্ষতি করা যাবে না।

রায়ে হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দকৃত সব হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ ঘোষণা করে তা উচ্ছেদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে রাজউক।