সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর কূলকিনারা পাচ্ছে না পুলিশ। বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। এদিকে গতকাল সোমবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বিপ্লবের বোন শাশ্বতী বিপ্লব বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা।

নিখোঁজের পাঁচ দিন পর গত শনিবার নৌ পুলিশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পানগাঁওয়ে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে দুরন্ত বিপ্লবের লাশ উদ্ধার করে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সদস্য।

দুরন্তর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কারা জড়িত থাকতে পারে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও তাঁদের ধারণা- দুরন্ত বিপ্লব বন্ধুদের সঙ্গে কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া এলাকায় যে কৃষি খামার গড়ে তুলেছিলেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে। মাস দুয়েক আগে আদাবরের জাপান গার্ডেন সিটিতে মা-ভাইয়ের বাসায় এসে উত্তেজিত হয়ে মোবাইল ফোনে অপর প্রান্তের ব্যক্তির সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন।
দুরন্তর বন্ধুরা বলছেন, দুরন্ত কয়েকটি বই অনুবাদ করেছেন এবং আল কোরআন বাংলায় অনুবাদ করছিলেন। এ নিয়ে কোনো গোষ্ঠীর শত্রুতে পরিণত হতে পারেন বলে ধারণা তাঁদের।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান সমকালকে বলেন, দুরন্ত বিপ্লবের নিখোঁজের ঘটনায় যেদিন সাধারণ ডায়েরি হয়েছে, সেদিনই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরই মধ্যে নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিবারের লোকজন যেসব সন্দেহের কথা বলেছেন, সেসবসহ বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে।

দুরন্ত বিপ্লব কেরানীগঞ্জের খোলামোড়ায় একটি বাসায় একা থাকতেন। তাঁর স্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা। তিনি থাকেন ইস্কাটন গার্ডেনে। তাঁদের সম্পর্ক ভালো ছিল না।
গত ৭ নভেম্বর বিকেল থেকে দুরন্ত নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় ৯ নভেম্বর তাঁর বোন শাশ্বতী বিপ্লব দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় জিডি করেন। পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টা ১৯ মিনিটে দুরন্তর সর্বশেষ অবস্থান ছিল কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ এলাকায়। সেই থেকে ফোন বন্ধ।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, দুরন্তকে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা তাঁকে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দিতে পারে। কেরানীগঞ্জে ঘাস চাষ নিয়ে কারও সঙ্গে বিরোধ ছিল কিনা, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
কৃষি খামারের কেয়ারটেকার আবুল কালাম বলেন, দুরন্ত বন্ধুদের সঙ্গে জমিতে ঘাস ও পোকা চাষ করতেন। অনলাইনে তিনি ঘাস বিক্রি করতেন। ঘাস চাষ করে অনেক লোকসান দিয়েছেন। তিনি যে জমিতে ঘাস চাষ করতেন, সেই জমি ১৫ দিন আগে ভাগাভাগি হয়েছে। ওই জমিতে সীমানা পিলার বসানোর কাজ চলছে। সীমানা পিলার দেওয়ার সময় এর মধ্যে পাঁচ দিন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। কী কারণে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল, সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি আবুল কালাম।



বিষয় : কূলকিনারা পাচ্ছে না পুলিশ বুড়িগঙ্গায় দুরন্ত বিপ্লবের লাশ

মন্তব্য করুন