করোনা মহামারির কারণে তিন বছর বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে ৩৩তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় 'এই জীবনের ব্যথা যত এইখানে সব হবে গত'- কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এমন অমিয় বাণী ধারণ করে দুই দিনের এ উৎসব শুরু হয়।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে উৎসব ভাগ করা হয়েছে তিন অধিবেশনে। উদ্বোধনী দিনে ছিল দুটি অধিবেশন। সকাল ১০টায় প্রথম অধিবেশন ছিল দুই পর্বের। প্রথমেই দেওয়া হয় গুণীজন সম্মাননা। বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা আয়োজিত এ উৎসবে সম্মাননা দেওয়া হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র্রের কণ্ঠযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা বাচিক শিল্পী আশরাফুল আলম ও সংগীতশিল্পী রফিকুল আলমকে। সম্মাননা স্মারক ও অর্থ তুলে দেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

আশরাফুল আলম বলেন, জগতের বিপুল কর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রবিঠাকুরের নাম। আজ তাঁর নামাঙ্কিত সম্মাননা পেলাম। এটা অত্যন্ত সম্মানের।
রফিকুল আলম বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত সম্মাননা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দুই শব্দসৈনিককে সম্মাননা দিতে পেরে আমরা গর্বিত।
এর আগে স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়া। শংসাবচন পাঠ করেন সাগরিকা জামালী ও সীমা সরকার।

অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সমবেত পরিবেশনা। এতে অংশ নেয় সংগীত ভবন, উত্তরায়ণ, সুরতীর্থ, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) ও বিশ্ববীণা। রবীন্দ্রনাথের পূজা-প্রেম পর্যায়ের গানের পাশাপাশি বৈচিত্র্য পর্যায়ের গান দিয়ে সাজানো এ পর্ব দর্শক-শ্রোতাকে বিমোহিত করে। এ পর্বের শুরুতেই মঞ্চে আসেন সংগীত ভবনের শিল্পীরা। তাঁরা পরপর গেয়ে শোনান 'লহো লহো তুলে লহো নীরব বীণাখানি' ও 'হেমন্তে কোন বসন্তেরই বাণী পূর্ণশশী ওই-যে দিল আনি'।
অগ্রহায়ণের মিষ্টি সকালে মঞ্চে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। উৎসবের সূচনা হয় সংগঠনের রীতি অনুযায়ী জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে। এরপর শিল্পীরা দুটি কোরাস পরিবেশন করেন।

মাঝখানে বিরতি দিয়ে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন। এতে অংশ নেওয়া শিল্পীরা হলেন- খন্দকার খায়রুজ্জামান কাইয়ুম, বুলা মাহমুদ, তানজিমা তমা, অনিকেত আচার্য, সাগরিকা জামালী প্রমুখ।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ একই মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে হবে আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান। উৎসবে সারাদেশ থেকে প্রায় ২০০ শিল্পী একক ও দলীয় পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন।

দুই দিনের অনুষ্ঠানে গানের পাশাপাশি আবৃত্তি পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন বাচিক শিল্পী আশরাফুল আলম, জয়ন্ত রায়, বেলায়েত হোসেন, মাহমুদা আখতার ও রেজিওয়ালী লীনা।