অর্থসংকটে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেন রোগীরা

কিডনি কার্যকরভাবে কাজ বন্ধ করে দিলে রক্ত ছেঁকে শরীর থেকে তরল বর্জ্য বের করতে রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। তবে এ চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় অর্থসংকটে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেন বেশিরভাগ রোগী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। তাঁদের মধ্যে প্রতিবছর ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। এই রোগীদের ৭৫ শতাংশ বিভিন্ন সময়ে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। এ ছাড়া হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে বছরে মারা যান আরও ২০ হাজার রোগী।

শনিবার রাজধানীর মিরপুরে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে দুই দিনের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের প্রথম দিনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন হয়েছে। দেশে রোগীর জীবিত আত্মীয়ের দান করা কিডনি প্রতিস্থাপন করা হলেও এখনও ব্রেইন ডেথ ঘোষিত ব্যক্তির অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়নি। এটা খুব শিগগিরই শুরু করতে চায় বিএসএমএমইউ।

কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনি রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। আর্থিক সংকটে বেশিরভাগ কিডনি রোগী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। তিনি আরও বলেন, মৃত ব্যক্তির অঙ্গদানের বিষয়ে অনেক মানুষের অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। সেসব দূর করতে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ব্রেইন ডেথ ঘোষিত ব্যক্তির কিডনি দানের বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারে ধর্মীয় নেতাদেরও যুক্ত করা প্রয়োজন।

কিডনি জটিলতা এড়াতে যথাসময়ে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তের ওপর জোর দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপ-উপাচার্য একেএম মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, নিয়মিত স্ট্ক্রিনিং না করানোর কারণে দেশে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ যথাসময়ে শনাক্ত হয় না। এ কারণে কিডনি সমস্যাও যথাসময়ে শনাক্ত না হয়ে কিডনি রোগী বাড়ছে।

সূচনা বক্তব্যে কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাসচিব রুহুল আমিন রুবেল বলেন, দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। সময়মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করায় অনেকে একদম শেষ সময়ে এসে জানতে পারেন তাঁদের কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক শামীম আহমেদ।