দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিরা নাক গলালে দেশের মঙ্গল হয় না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, কিছু লোক বিদেশি দূতাবাসে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং চান যে, তারা (দূতাবাস) কিছু একটা চাপ প্রয়োগ করুক। এটি খুবই দুঃখজনক।

কূটনীতিকদের সঙ্গে বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদদের সাক্ষাতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিরোধীরা হয়তো দেশের অনিষ্ট চান না। কিন্তু অনেক সময়ে পথভ্রষ্ট হয়ে ভুল কাজ করেন। 

শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কল্যাণমূলক সংগঠন ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ফোসা) উদ্যোগে দিনব্যাপী 'ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজার' অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং তাঁর সহধর্মিণী ও ফোসার প্রধান পৃষ্ঠপোষক সেলিনা মোমেন। 

এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ফোসার সভাপতি পররাষ্ট্র সচিবের সহধর্মিণী ফাহমিদা জেবিন সোমা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খোরশেদ আলম, সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস, ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরাসহ ফোসা পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং দর্শনার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

আফগানিস্তানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশিদের জ্বালায় কী কষ্টে রয়েছে আফগানিস্তান! চিলিতে একটি জনপ্রিয় সরকার ছিল। বিদেশিদের জ্বালায় ধ্বংস হয়ে গেল। বহু বছর চিলিতে মানুষ আর শান্তিতে থাকতে পারেনি। এই যে বিচারবহির্ভূত হত্যা বা গুম- এগুলো চিলি থেকেই এসেছে।

অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিদেশিরা কখনোই সংশ্লিষ্ট দেশের মঙ্গলে কাজ করেন না। তাঁরা তাঁদের দেশের স্বার্থে কাজ করেন। আমাদের দেশের একটি রীতি হয়ে গেছে যে, বিদেশিদের কাছে ধরনা দেওয়া। বিদেশিরা যেখানে মাতবরি করেছেন, সেই দেশের অবস্থা ভালো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিদেশিকে এক পয়সা পাত্তা দেয় না। ভারতেও বিদেশিরা অনেক কিছু বলেন, তারা এগুলোকে পাত্তাই দেয় না। যেসব দেশের জনগণের ও নেতৃত্বের সম্মান রয়েছে তারা বিদেশিদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করে না।

অতীতে সরকার গঠনে কূটনীতিকদের প্রভাব নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশিরা আগে অনেকবার বিভিন্নভাবে প্ররোচনা ও প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। কোনোটাই কাজে লাগেনি। এ দেশের মানুষ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে।

কূটনৈতিক শিষ্টাচার নিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কারণে তারা রাশিয়ার অনেক কূটনীতিককে বের করে দিয়েছে। এ ছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান এতে সহযোগিতা করেছে, তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি রয়েছে বলে তারা পারে। আমাদের সেই শক্তি নেই, আমরা এ পথে যাইনি। তবে সময় হলে আমরাও ব্যবস্থা নেব।