একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের গতি কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক। তিনি বলেন, ‘একটি ট্রাইব্যুনালে মামলার চাপ বেশি থাকায় বিচার কার্যক্রম অনেকটা স্থবির হয়ে আছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে রাজাকার ও সাক্ষীরা তদন্ত এবং বিচার চলাকালে মারা যাচ্ছে।’ বয়োবৃদ্ধ আসামি ও সাক্ষীরা বেঁচে থাকা অবস্থায় এসব বিচারাধীন মামলা শেষ করা সম্ভব নয় বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সানাউল হক বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বর্তমানে একটি ট্রাইব্যুনালে ৩৫টি মামলা বিচারাধীন। মামলা দ্রুত নিস্পত্তির জন্য প্রয়োজন দুটি ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু হচ্ছে না। তদন্ত সংস্থার অবস্থাও করুন। তদন্ত সংস্থায় ২৪ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা আছেন। সরকারের সংশ্নিষ্ঠদের কাছে এ জনবল চেয়ে অনেক আগেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে। তদন্ত সংস্থায় আরও ৪৭১টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য রয়েছে।’

চট্টগ্রামের শওকতের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চুড়ান্ত

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সৈয়দ শওকতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে তদন্ত সংস্থা। সোমবার তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে ওই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক সানাউল হক বলেন, ‘একাত্তরে কনভেনশন মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা শওকতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির নানুপুর মুনসেফবাড়ী। মামলার অপর আসামি একই গ্রামের সৈয়দ ওমর ফারুক হায়াত গত বছর মার্চ মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ১৪৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই আসামির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকায় ১০ জনকে হত্যা, ৪ জনকে ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৩৭ জনকে। মামলাটি তদন্ত করেন তদন্ত কর্মকর্তা বদরুল আলম।’

বিষয় : যুদ্ধাপরাধের বিচার

মন্তব্য করুন