রাজধানীর বাড্ডায় সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে শিপন নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া আরেকটি ধারায় ৩২ বছর বয়সী শিপনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ঢাকার সাত নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম বুধবার আসামি শিপনের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর শিপনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

ভোলার লালমোহন থানার ভাঙ্গাপুল এলাকার শামসুল হকের ছেলে শিপন পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। বাড্ডার আদর্শনগর এলাকায় এক বাসায় তিনি ভাড়া থাকতেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) সাংবাদিকদের জানান, শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে আসামি শিপন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

রায়ে আদালত বলেন, শিশুরা যদি তাদের আশেপাশের প্রতিবেশীদের কাছে নিরাপদ না থাকে তা সমাজের জন্য অশনি সংকেত। আসামি একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে নিজের পাশবিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ভিকটিমের জীবনে কালিমা লেপন করেছে এবং তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছে। আসামির ওই অপরাধের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯(২) ধারায় তার সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য।

মামলার সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা-মা বাড্ডার আদর্শনগর এলাকায় টিনশেড বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দুপুরে শিপন বাসায় ফিরে বাসার সামনে শিশুটিকে দেখতে পান। এরপর শিশুটিকে রুমে ডেকে ভাত খাওয়ান এবং খাওয়া শেষে ধর্ষণ করেন। এসময় শিশুটি চিৎকার করলে তার মুখ ও গলা চেপে ধরেন শিপন। তাতে সে নিস্তেজ হয়ে পড়লে বাথরুমে ফেলে রেখে চলে যান।

এর পরদিন ৩১ জুলাই ওই বাসার টয়লেট থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিনই শিশুটির বাবা মেহেদী হাসান বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। মামলায় শিপনকে একমাত্র আসামি করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

২০১৯ সালের ২৬ জানুয়ারি এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই রাশেদুল আলম আদালতে শিপনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। রাষ্ট্রপক্ষের ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার শিপনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিলেন বিচারক।