‘রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠাপর্বে শেখ মুজিব ও সংবাদপত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষ বিদেশি বেতার শুনতে পেত না, টেলিভিশন দেখতে পেত না। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু লাহোরে এবং কোথায় কী করছেন এগুলো খুব ভালোভাবে আমাদের সংবাদপত্র সংগ্রহ করত এবং প্রকাশ করত। বঙ্গবন্ধুর এই খবরগুলো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার মানসিকতা তৈরি করেছিল। যেখানে বঙ্গবন্ধুর সহযাত্রী ছিল গণমাধ্যম।   

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরসি মজুমদার মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু বক্তৃতামালা-১৭’ আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি। এতে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদ এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ বাদে বিজ্ঞান, ব্যবসা অনুষদসহ অন্যান্য অনুষদে বাংলাদেশ স্টাডিজ চালু হতে যাচ্ছে। সেখানে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, বুদ্ধিজীবীসহ সবকিছু পাঠ্যসূচিতে থাকবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশ গুপ্ত বলেন, ১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ঢাকায় আসেন তখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাঁকে মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক করতে মনস্থির করেন। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে এভাবে বলা হয়েছে, এ লোক অদম্য, তিনি প্রলোভনের কাছে নত হতে রাজি নন। স্বাধীনতার জন্য মানুষকে সংগঠিত করতে বাংলার প্রতিটি জনপদ, ধূলিকণায় তার পদচিহ্ন রয়েছে। কেউ বলতে চান, বঙ্গবন্ধু গণমাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন বলেই রাজনৈতিক অঙ্গনের সিঁড়িগুলো সহজে অতিক্রম করতে পেরেছিলেন। তরুণ রাজনীতিবিদ হলেও গণমাধ্যমে তিনি স্থান করে নিতে পেরেছিলেন। সেসময় যদি আজকের মত প্রযুক্তি থাকত তাহলে বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ পুঙ্খানুপুঙ্খ সংরক্ষণ করা যেত। 

আলোচনায় টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সে সময় বঙ্গবন্ধু ছিলেন গণমাধ্যমের আবশ্যকীয় আধেয়। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করা কঠিন ছিল। তাকে আধেয় হিসেবে ব্যবহার করে সংবাদপত্র টিকে ছিল। বঙ্গবন্ধু গণমাধ্যমের ভিতরকার কথা জানতেন। রাজনীতির পাশাপাশি সংবাদপত্র যে একটি শক্তিশালী মাধ্যম সেটি তিনি বুঝেছিলেন। তিনি সাংবাদিকতার শিক্ষকের মত সাংবাদিকতার সবকিছু ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবাদিকদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল তবে সম্পর্ক এবং প্রশাসনিক দায়িত্বে তিনি গুলিয়ে ফেলতেন না।

সভাপ্রধানের বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং সংবাদপত্রই নয়, কীভাবে বঙ্গবন্ধু এগিয়ে যাচ্ছিলেন এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম সবকিছু আলোচনায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরও গবেষণা আমাদের করতে হবে।