বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এবার হাওরের ফসলের গুরুত্ব বেশি বলে মন্তব্য করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান। রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সুনামগঞ্জে হাওরে বাঁধ নির্মাণে গঠিত জেলা কমিটির এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সচিব।

সচিব বলেন, 'হাওরের বাঁধ নির্মাণের কাজটি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এবং সমাজের নানা শ্রেণি ও পেশার লোকজনের সমন্বয়ে করতে হবে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণেই হাওরের ফসল এবার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জমিতে আবাদ বাড়াতে হবে। হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, 'এবার সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বাঁধ নির্মাণকাজের সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার। এ বিষয়ে আরও বক্তব্য দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, জামালগঞ্জের ইউএনও বিশ্বজিত দেব, শান্তিগঞ্জের ইউএনও আনোয়ার উজ জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজাদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, জেলা কৃষক লীগের সদস্য সচিব বিন্দু তালুকদার প্রমুখ।
প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, এবার সুনামগঞ্জের ৪৮টি হাওরে বাঁধের কাজ হবে। এরই মধ্যে ৯০৪টি প্রকল্প প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে জেলা কমিটি ১৯৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে ৪০টিতে। এবার বন্যায় বাঁধ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রকল্প ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) বাড়বে। এবার ৬২৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১৭০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১০০ কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরের কাজের মধ্যে ২০১৭ সালে প্রকল্প ছিল সবচেয়ে বেশি, ৯৬৫টি। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তবে এবারও হাওর থেকে পানি ধীরে নামায় জরিপ ও প্রকল্প নির্ধারণে বিলম্ব হয়েছে বলে জানান তিনি।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, এখনও অনেক স্থানে কাজ শুরু হয়নি। দ্রুত সব হাওরে কাজ শুরু করতে হবে। কাজে আরও গতি বাড়াতে হবে।