বড় দল ভোটে অংশ না নিলে গ্রহণযোগ্যতা খর্ব হয়: সিইসি

কাজী হাবিবুল আউয়াল- ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৯:০৪ | আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৯:০৪
বড় বড় রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন অবৈধ হবে না, গ্রহণযোগ্যতা খর্ব হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেষ ভাষনেও তিনি বলেছিলেন বিএনপির জন্য সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। এটা তিনি মুখে, টেলিফোনে এবং ডিও লেটার দিয়ে আহ্বান জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আহ্বানে সাড়া দেয়নি। যদি নির্বাচন আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক হতো, কমিশন খুশি হতো। তাহলে ভোটার উপস্থিতি নি:সন্দেহে আরও বেশি হতো। বড় বড় রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে- নির্বাচন অশুদ্ধ হবে না, অবৈধ হবে না। কিন্তু নির্বাচনের সার্বজনীনতা, গ্রহণযোগ্যতা, ন্যায্যতা খর্ব হতে পারে।
তিনি বলেন, একটা বড় নির্বাচন হয়ে গেছে। নির্বাচনটা ভালো হয়েছে কি মন্দ হয়েছে সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়, কমিশন চেষ্টা করেছে। সামনে আরও অনেকগুলো নির্বাচন আছে। উপজেলা নির্বাচন রয়েছে। এগুলোকেও কিন্তু খাটো করে দেখার বিষয় নয়।
উপজেলোয় দলীয় প্রতীক না দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সিইসি বলেন, শুনেছি এবার উপজেলা পরিষদে দলীয় প্রতীক থাকবে না। গণমাধ্যমে তাই দেখলাম, এটা ভালো। কারণ এটাতো রাষ্ট্রীয় নির্বাচন নয়, এলাকা ভিত্তিক। এতে এলাকার জন্য নির্বাচন করবেন, পুরো জাতির জন্য নয়। কাজেই স্থানীয় সরকারের সীমিত ক্ষমতা থাকে, পরিপূর্ণ ক্ষমতা হয়তো থাকে না। আমি খুব একটা বলতে চাই না। হয়তো পাকিস্তানের দৃষ্টান্ত এসে যেতে পারে। সেখানেও একটা নির্বাচন... এটা বেশ সাড়া জাগানো নির্বাচন হয়েছে। আমি ওর বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। সেটাও একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে।
সিইসি বলেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সত্যিকার অর্থে জনপ্রিয়, জনগণকে যারা ভালোবাসে, জনগণের সঙ্গে পরিচিতি আছে, তারা জনগণকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচন করবেন। তিনি যে দলেরই হোক। তারা অংশগ্রহণ করুক এবং নির্বাচিত হয়ে জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি যাতে পূর্ণ করতে পারে সেই প্রত্যাশা ব্যক্তি করি।
তিনি বলেন, নি:সন্দেহে আমার যেটা অভিজ্ঞতা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি হয়। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ, ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির যে সম্পর্ক সেটি অনেক বেশি গম্ভীর এবং গভীর। যার কারণে যারা ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য অনেকবেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন। এ জন্য এসব নির্বাচনে উপস্থিতিটা বেশি হয়।
গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, অনেক সময় রাষ্ট্রের অন্যান্য স্তম্ভগুলো যখন কাজ করে না। তখন কিন্তু সবগুলো কাজ গণমাধ্যম একসঙ্গে করে। সব দায়িত্বগুলো নিয়ে ফেলে। সমাজকে অনেকটা বাঁচিয়ে রাখে। বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করা না হলে, সেখানে গণমাধ্যম এগিয়ে এলে জবাবদিহিতার একটি জায়গা আছে। সেটি আরও পরিস্ফুটিত হতে পারে এবং এটি প্রয়োজন।
তিনি বলেন, শুধু প্রশংসা নয়, যেখানে সমালোচনা প্রয়োজন সেখানে সমালোচনা করতে হবে। এতে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। গণমাধ্যমে সেটা ছাড় দেবে না। এটাই গণমাধ্যমের দায়িত্ব। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আমি যথেষ্ট আস্থাশীল।
আরএফইডি’র নবনির্বাচিত সভাপতি একরামুল হক সায়েমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.), বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম প্রমুখ।