রংপুরে ১৭তম স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার ১৬ বছর পর স্বামী আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক এম আলী আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর আসামি আবু সাঈদের ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে সাঈদ ও তার ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগম দু'জনই পলাতক রয়েছেন। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারক রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি তাজিবুর রহমান লাইজু জানান, অভিযুক্ত আবু সাঈদ যৌতুকের লোভে একের পর এক বিয়ে করছিলেন। তানজিনাকে বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা যৌতুকের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দেন তার বাবা। বাকি ১৫ হাজার টাকার দাবিতে তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার অনন্তরামপুর গ্রামের তাজিম উদ্দিনের মেয়ে তানজিনা খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার পালগারদ গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে আবু সাঈদের বিয়ে হয়। তানজিনা ছিলেন সাঈদের ১৭তম স্ত্রী। পরবর্তীতে তাছকিরা বেগম নামে আরও এক নারীকে নিয়ে করেন সাঈদ।

২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ১৫ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে আবু সাঈদ তার ১৮তম স্ত্রী তাছকিরার সহযোগিতায় তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যান। পরদিন সাঈদ ও তাছকিরাকে আসামি করে তানজিনার বাবা তাজিম উদ্দিন পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক। ৩০ জুলাই মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

এদিকে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই জামিন পেয়ে কিছুদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে আবু সাঈদ পলাতক রয়েছেন। এচাড়া সাঈদের ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগম ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়ে ২০১৪ সালের ১৮ মে থেকে পলাতক রয়েছেন।