- বাংলাদেশ
- বরগুনার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১০২৪ কোটি টাকার কর মওকুফ
বরগুনার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১০২৪ কোটি টাকার কর মওকুফ

বরগুনার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফাইল ছবি
বরগুনায় নির্মিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ পাওনা প্রায় ১ হাজার ২৪ কোটি টাকার কর মওকুফ করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। চীন ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বরগুনার তালতলীতে ৩০৭ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পাওয়ার চায়না রিসোর্স ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য গঠিত যৌথ কোম্পানি হলো বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (বিইপিসিএল)।
আইআরডির সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইনের ৯ নম্বর ধারার ক্ষমতাবলে সরকার এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বিইপিসিএলের ৩০৭ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে আর্থিক দলিল ও চুক্তির বিপরীতে আরোপ করা স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ১ হাজার ২৩ কোটি ৭২ লাখ ২০হাজার ৬১৮ টাকা মওকুফ করা হয়। আইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বিইপিসিএল তাদের স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফের জন্য কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে আইআরডির কাছে অনুরোধ করে। জাতীয় স্বার্থে এবং বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এ অনুরোধ করা হয়েছে বলে দাবি করে তারা। এর আগে এ ধরনের অনেক কোম্পানির জন্য এমন অনুরোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইন অনুযায়ী, এ ধরনের কোম্পানিগুলোকে শত শত কোটি টাকা কর সরকারি কোষাগারে দিতে হয়। কিন্তু সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়ে এ ধরনের প্রকল্পগুলোকে প্রজ্ঞাপন বা অফিস আদেশ জারি করে মওকুফ করা হয় স্ট্যাম্প ডিউটি। এমন প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে স্ট্যাম্প আইন সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর স্ট্যাম্প ডিউটি যাই আরোপযোগ্য হোক না কেন, এর পরিমাণ কোনোভাবেই ১০ কোটি টাকার বেশি হবে না। গত ১ জুলাই থেকে নতুন সংশোধনী কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু বিইপিসিএল আবেদনটি কয়েক বছর আগে করায় সেভাবেই বিভিন্ন পর্যায়ে তা অনুমোদন হয়। তাই এখন আদেশ জারি করে তাদের বিরাট অঙ্কের কর ছাড় দেওয়া হলো।
বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নীতিমালার আওতায় বর্তমানে এ ধরনের প্রকল্পগুলো বিভিন্ন ধরনের করছাড় উপভোগ করে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মিত এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ৩ হাজার ১৭০ কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮০১ টাকা মওকুফ করে সরকার। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ সরকারের এই নীতির সমালোচনা করে বলেন, কয়লা-বিদ্যুতে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। তার পরও সরকার নানাভাবে এসব প্রকল্পকে সুবিধা দিয়ে আসছে। পরিবেশ বাঁচাতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
মন্তব্য করুন