গ্যাসের দাম আগের তুলনায় সর্বোচ্চ ৫৭ শতাংশ বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। পাশাপাশি বর্ধিত মূল্য ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে আগামী এপ্রিল থেকে কার্যকরের অনুরোধ করেছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহেরও দাবি করেছে সংগঠনটি।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ ও নির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গত ১৮ জানুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এক নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে। এ খাতের গ্যাসের দাম ১৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে বর্ধিত দাম কার্যকর হবে।

চিঠিতে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিপক্ষে তাঁরা নন। তবে যে হারে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাতে শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। শিল্পকারখানা সচল রাখা কঠিন হবে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প।

বর্তমান সময়কে অর্থনীতির সংকটকাল উল্লেখ করে জনস্বার্থে গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি লিখেছেন, এ মুহূর্তে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।

তিনি চিঠিতে লিখেছেন, উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের শর্তে এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ১৬ টাকার স্থলে সর্বোচ্চ ৫৭ শতাংশ বাড়িয়ে ২৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে এ খাতে গ্যাসের দাম ৮৭ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে ব্যবহূত গ্যাসের দাম যথাক্রমে ১১ টাকা ৯৮ পয়সা, ১১ টাকা ৭৮ পয়সা এবং ১০ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে প্রতি ক্ষেত্রে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের গ্যাসের প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা শূন্য ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা করা হয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও লিখেছেন, কভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, উৎপাদন উপকরণসহ সব খাতে দাম বেড়েছে। পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় ও মুদ্রা বিনিময় হার অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির কারণে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। এতে শিল্পকারখানা সচল রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এ প্রেক্ষাপটে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্প খাতে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যবসার পরিচালন খরচ আরও বাড়বে। স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।