করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিডনি রোগীর (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ-সিকেডি) মৃত্যুঝুঁকি সাধারণ মানুষের চেয়ে ১০ গুণ বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগীরা করোনায় আক্রান্ত হলে শতকরা ৫০ ভাগেরই মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।

গতকাল সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে বক্তারা এসব তথ্য জানান। 'মাল্টিটিউড অব ইস্যুজ ইন কভিড :রেনাল, কার্ডিয়াক অ্যান্ড মেটাবলিক ইনফ্লুয়েন্স' শীর্ষক সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে কিডনি ডিজিজ রিসার্চ গ্রুপ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএসএমএমইউর হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. দিপল অধিকারী। সিম্পোজিয়ামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু সালেহ আহমেদ, বারডেমের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কনসালট্যান্ট ডা. মীর ইসারাকুজ্জামান একটি করে গবেষণা প্রকাশ করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিডনি রোগীদের করোনা হলে তার ফল অত্যন্ত খারাপ হয়। বিশেষ করে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস রোগীদের করোনা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এমনকি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের করোনায় মৃত্যুঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ।

বক্তারা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের শরীরে করোনার টিকার কার্যকারিতা অনেক কম। ডায়ালাইসিস রোগীদের শরীরে করোনার টিকার কার্যকারিতা শতকরা ৮৭ ভাগ। এমনকি করোনার টিকা নেফ্রাইটিস রোগের পুনরাগমন ঘটাতে পারে বলেও জানান তাঁরা।

একটি গবেষণার বরাত দিয়ে বক্তারা বলেন, করোনা রোগীদের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগের ডায়াবেটিস আছে এবং তাঁদের শতকরা ১৫ ভাগের চিকিৎসাধীন থাকার প্রয়োজন হয়েছে। কভিড-পরবর্তী জটিলতাকে লং কভিড সিনড্রম বলা হয়। তাঁদের দুর্বলতা, গায়ে ব্যথা, মাথা ধরা, ঘুম কম হওয়া ইত্যাদি সমস্যা থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় আক্রান্তদের ১২ শতাংশ ডিপ্রেশনে ভুগছেন। তাঁদের এ অবস্থা থেকে চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল ব্যানার্জি বলেন, কভিড শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।