- বাংলাদেশ
- স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তরুণ স্বেচ্ছাসেবী যুক্ত হলে বৃদ্ধি পাবে সেবার মান
সিরাক বাংলাদেশ আয়োজিত সভায় বক্তারা
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তরুণ স্বেচ্ছাসেবী যুক্ত হলে বৃদ্ধি পাবে সেবার মান

ছবি: সমকাল
স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণার নির্ধারিত ২০টি কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে সেবা কার্যক্রম। এসব কেন্দ্রের প্রতিটিতে ২ জন করে (১ জন ছেলে এবং ১ জন মেয়ে) ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী স্বেচ্ছাসেবী সেবা প্রদান করছে। প্রথম দিকে কিশোর-কিশোরীদের উপস্থিতি কম থাকলেও দিনে দিনে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের আন্তরিকতা, উৎসাহ ও উদ্যমতা। তাই কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে তরুণ স্বেচ্ছাসেবী সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে সেবার মান বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজন।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরের মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। উন্নয়ন সংস্থা সিরাক-বাংলাদেশ এর আয়োজনে 'কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চলমান কার্যক্রমের ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভা' অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সংস্থার সহকারী পরিচালক (প্রোগ্রাম) মো. সেলিম মিয়ার সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন মিরপুর মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. মো. শামসুল করিম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবার পরিকল্পনা যুগ্ম সচিব ও পরিচালক মো. মাহবুব আলম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক ডা. মুনিরুজ্জামান সিদ্দিকী, পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, পরিবার পরিকল্পনা, নারায়ণগঞ্জ এর উপ-পরিচালক স্বপন কুমার শর্মা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এমসিএইচ, এআরএইচ) ডা. মনজুর হোসেন, ইউএসএআইডি সুখী জীবন পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল ঢাকা এর অ্যাডোলেসেন্ট এন্ড ইয়ুথ স্পেশালিস্ট ডা. ফাতেমা শবনম ও সিরাক বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রোগ্রাম অফিসার সংগীতা সরকার। তিনি জানান, বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে অবিবাহিত কিশোর-কিশোরীদের পরিবার পরিকল্পনার অপূর্ণ চাহিদা সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থার নেই। এর ফলে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী অধিকাংশ তরুণ-তরুণীদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যায়, যারা কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর প্রভাব বিস্তারকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মাহাবুব আলম কিশোর-কিশোরীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক নির্দেশিকা অনুযায়ী ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডারদের তথ্য ও পরামর্শ সেবা প্রদানের উপর জোর দেন। ডা. মুনিরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘ভিপিএল-এর জন্য সঠিক সেবা দেওয়ার বিষয়ে ক্লিনিকাল প্রশিক্ষণ এবং নির্দেশিকা প্রয়োজন।’ তিনি এই ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডার মডেলটির পরিসর বৃদ্ধির বিষয়ে সুপারিশ জানান।
ডা. মনজুর হোসেন বলেন, ‘আমরা মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করার জন্য একটি সঠিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আশা করছি ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডার মডেলটি চলমান কেন্দ্র এবং অন্যান্য কেন্দ্রে বিস্তার লাভ করবে।’ এস এম সৈকত বলেন, ‘প্রকল্প চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় আমাদের।’ বিভিন্ন সভা-সেমিনারের মাধ্যমে সকলের যৌথ প্রচেষ্টায় সমাধান সম্ভব হয়েছে এবং প্রকল্পটি সমৃদ্ধ হয়েছে। প্রকল্পের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন সভা থেকে উঠে আসা সুপারিশমালাগুলো গল্প আকারে ডকুমেন্টেশন করা হবে এবং পরবর্তিতে তা জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারকগনদের সামনে প্রদর্শন করা হবে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন