রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাধ্যক্ষের নির্দেশে হলে বরাদ্দ হওয়া সিটেই উঠেছিলেন জাকির হোসেন নামে এক ছাত্র। তবে থাকতে পারেননি এক মাসও। তাকে সিট থেকে নামিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। সেখানে উঠিয়ে দেয় আরেক ছাত্রকে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো সুরাহা মেলেনি। অবশেষে কাঁথা-বালিশ নিয়ে বিছানা পাতেন প্রশাসনিক ভবনের গেটে। এতে ওই ভবনে আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক ও হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলামের আশ্বাসে অভিনব এই প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত করেন তিনি।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী জাকিরকে গত ২ জানুয়ারি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৩৫ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেয় প্রশাসন। তিনি আবাসিকতা নিয়েই ওই কক্ষে ওঠেন। কিন্তু তিনি সিটে উঠার কয়েকদিন পর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম ও তার অনুসারীরা ওই সিটে অন্য এক শিক্ষার্থীকে তুলে দেন। বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানালে তিনি জাকিরকে নিজ সিটেই থাকতে বলেন। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাদের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকির কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগী জাকির বলেন, গত ২২ জানুয়ারি রাতে আমাকে ওই সিটে দেখে হল প্রাধ্যক্ষকেও গালাগাল করেন ছাত্রলীগের হল সাধারণ সম্পাদক মোমিন ও তাঁর অনুসারীরা। তারা ২৯ জানুয়ারির মধ্যে কক্ষ ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু আমি কক্ষ না ছাড়ায় ১ ফেব্রুয়ারি রাতে আমার বিছানাপত্র ফেলে দেন তারা। পরে আর ওই সিটে উঠতে পারিনি। বাধ্য হয়ে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বিছানাপত্র নিয়ে প্রশাসন ভবনের গেটে অবস্থান নেই। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরে আসি। কিন্তু কতক্ষণ নিরাপদে থাকতে পারবো তা নিয়ে সংসয়ে আছি। সামনে আমার ফাইনাল পরীক্ষা। পড়াশোনা করতে পারছি না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলামকে একাধিকবার কল করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলাম বলেন, সিট নিয়ে একটি ঝামেলার কারণেই জাকির বিছানাপত্র নিয়ে প্রশাসন ভবন গেটে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাকে পরে আমরা বুঝিয়ে হলে নিয়ে আসি। সে এখন তার সিটেই থাকছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, এটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এ বিষয়ে আলোচনা করতে হলের প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে প্রশাসনের মিটিং ডাকা হয়েছে। বৈঠকে এসব ঘটনায় আমরা জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারব বলে আশা করছি।