সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো নিয়ে বিতর্কে রিক্রুটিং এজেন্সির সংগঠন বায়রার মতবিনিময় সভায় হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেলে শেরাটনে 'কম খরচে, দ্রুত কর্মী প্রেরণের নিমিত্তে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বায়রার সকল সদস্যের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি' শিরোনামে এ মতবিনিময় সভা হয়।

আগামীকাল শনিবার মালয়েশিয়ার নতুন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে। তার দু'দিন আগে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ব্যবসায়িক বিরোধ প্রকাশ্যে এলো। অনিয়মের অভিযোগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। ২০২১ সালে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর গত আগস্ট থেকে কর্মী নিচ্ছে দেশটি।

পাঁচ মাসে প্রায় আড়াই লাখ কর্মীর চাহিদাপত্র এলেও ৫০ হাজার ৯০ জন বাংলাদেশি যেতে পেরেছেন। প্রথমে 'সিন্ডিকেট' নামে পরিচিত ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর কাজ দেওয়া হলেও, পরে আরও ৭৫ এজন্সিকে যুক্ত করা হয়। কর্মীপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৮০ টাকা খরচ নির্ধারণ করা হলেও, এজেন্সিগুলো চার থেকে পাঁচ গুণ টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

গতকালের মতবিনিয়ম সভায় বায়রার সদস্যরা বলেন, ১ হাজার ৭০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে মাত্র ১০০টি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারছে। বাকি এজেন্সিগুলোও যেন কর্মী পাঠাতে পারে, সে জন্য এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মিডওয়ে ওভারসিজ লিমিটেড নামের এজেন্সির মালিক মোহাম্মদ রফিকুল হায়দার ভূঁইয়া বক্তব্য দিতে শুরু করলে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির সূত্রপাত হয়। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর কাজ পাওয়া এবং না পাওয়া এজেন্সির মালিকরা হাতিহাতিতে জড়ান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় মঞ্চে ছিলেন বায়রার সাবেক সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, বর্তমান সভাপতি আবুল বাসার, মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি নুর আলী, সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।

সাধারণ সদস্যরা অভিযোগ করেন, জ্যেষ্ঠ নেতারা শুরুতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও নিজেরা কর্মী পাঠানোর কাজ পাওয়ায় চুপ হয়ে গেছেন। মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করা ২০টি এজেন্সি মালিক সিন্ডিকেট ভেঙে সবার জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার দাবি জানান। টাওয়ার ট্রেড এজেন্সির মালিক ইছহাক খান বলেন, সবাইকে সুযোগ না দিলে সিন্ডিকেটের ১০০ এজেন্সিকে প্রতিহত করা হবে। সবাই কাজ না পেলে বন্ধ থাকুক মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।

বায়রা সভাপতি বলেন, ১০০ এজেন্সি কর্মী পাঠাতে পারবে। কাকে রেখে কাকে দেওয়া হবে ব্যবসা? এ সময় বায়রা সদস্যরা লটারির দাবি জানান। তবে আবুল বাসার বলেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ মিলে সমঝোতার মাধ্যমে সব কিছু নির্ধারণ করতে হবে। সরকার সমঝোতা স্মারক পরিবর্তন করে যেন সবাইকে ব্যবসার সুযোগ দেয়- এ দাবি জানাব। মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হবে।

বিষয় : মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বায়রার সভায় হাতাহাতি

মন্তব্য করুন