- বাংলাদেশ
- অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন শাহনাজ মুন্নী
অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন শাহনাজ মুন্নী

গল্প, উপন্যাস ও কবিতায় অনন্য অবদানের জন্য 'অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৯' পেয়েছেন কবি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী। শনিবার শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হামীম কামরুল হক। সভাপতিত্ব করেন পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
অনুষ্ঠানে আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, ‘কথা সাহিত্যের মাধ্যমে যা কিছু অর্জন করেছি, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে তা করি না। পাক্ষিক অনন্যা'র এই পুরস্কার যেন বন্ধ না হয়। প্রতিটা নারীই বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। আমিও আগে অনন্যা পুরস্কার পেয়েছি তারপর বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছি। এই পুরস্কার ধাপে ধাপে এমন জায়গায় উঠেছে। এটা প্রথম স্বীকৃতি নারীকে উপরে উঠানোর জন্য।’
হামীম কামরুল হক বলেন, ‘এই পুরস্কারটি যিনি দেন তিনি অনন্যা। আমাদের সময়ের নানারকম সংকট, জটিল আবর্ত সহজভাবে গল্পের মধ্য দিয়ে তিনি তুলে ধরেছেন। মানুষকে সামগ্রিকভাবে দেখার ক্ষেত্রে একজন নারী যা দেখতে পারেন, পুরুষ তা পারে না। তারা পুরুষকে প্রতিপক্ষ না, সমকক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। তার লেখায় গভীর আন্তরিকড়া দেখা যায়।’
তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিরাট একটা পরিবর্তন এসেছে। তবে এ বিবর্তন তো হবেই। আগে অনেকেই বলতেন নারী কোথায় পাবেন? কিন্তু অসুবিধা হচ্ছেই না। শীর্ষ দশ পুরস্কার প্রদানে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। এই পরিবর্তন আসছে মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য।’
পদ্ম আর গুজবের গন্ধে ভরা এই পুরনো শহরের রাস্তায়/বাজপাখি কাঁধে নিঝুম দুপুরে কে যেন হেঁটে যায়/ আমিও খেতে চাই লীলা বিহারে ভয়শূন্যতার আলো গভীরে। শাহনাজ মুন্নী তার কবিতায় করুদ্ধ এক অন্ধকারের গল্প বলেছেন, হেঁটেছেন হৃদয়ঘরের বারান্দায়। কলমের মাধ্যমেই সৃষ্টি করেছেন নতুন ভুবন। এই বিশাল পথে তার সঙ্গী শুধুই শব্দ।
শাহনাজ মুন্নীর জন্ম ১৯৬৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। একদিকে অস্থির, অপরদিকে জাদুময় সময় তখন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের পর পেশা হিসেবে বেছে নেন টেলিভিশন সাংবাদিকতা। কিন্তু একদিকে সামাজিক দায়বোধ থেকে তার পেশাগত জীবন। অন্যদিকে সামাজিক ঘটনা তাকে আলোড়িত করে। সেই তাগাদা থেকে তিনি একের পর এক লিখে চলেন গল্প, কবিতা, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য ও প্রবন্ধ। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৪। উল্লেখযোগ্য বই হলো- এল করুদ্ধ অন্ধকার, বাদুর ও ব্র্যান্ডি, তৃতীয় ঘণ্টা পড়ার আগেই, পান সুন্দরী, নির্বাচিত গল্প: আমি আর আমিন যখন আজিমপুরে থাকতাম। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩-এ মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশ হচ্ছে তার উপন্যাস ‘স্নানের শব্দ’।
উল্লেখ্য, বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর একজন কৃতী নারী সাহিত্যিক অথবা সাহিত্য-গবেষককে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
মন্তব্য করুন