দেশে আবাসন খাতের ব্যবসা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে যা ছিল একটি ভবন বা বাড়ি এখন তা অ্যাপার্টমেন্ট, কনডোমিনিয়াম, হোটেল কিংবা কমার্শিয়াল প্রপার্টিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। প্রযুক্তি আমাদের দেশে ব্যাপক এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনজুড়ে আছে। উন্নত জীবনযাত্রার মানের পাশাপাশি মানুষ তাদের জীবনে প্রযুক্তির একীকরণকে গ্রহণ করেছে। এর ফলে আবাসনের ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির খোঁজ বেড়েছে মানুষের। প্রযুক্তির ফলে মানুষ প্রপার্টি লেনদেনে যে সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারে তার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ বিক্রয় (Bikroy). দেশের মানুষকে প্রপার্টি বেচাকেনা কিংবা ভাড়ার জন্য ডিজিটালমুখী করার পথপ্রদর্শক বিক্রয়।

বিক্রয়ের গ্রাহকরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে সুবিধামতো যে কোনো লোকেশন থেকে প্রপার্টি কেনাবেচা করতে পারেন। যে কেউ বিক্রয়ের ওয়েবসাইটে পছন্দের প্রপার্টি বিক্রি করতে চাইলে তার বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে পারেন। একইভাবে আগ্রহীরা ওয়েবসাইটটি থেকে হাজারো শ্রেণিবদ্ধ প্রপার্টি ব্রাউজ করতে পারেন এবং তাদের পছন্দসই প্রপার্টি বেছে নিতে পারেন। মানুষের সম্পত্তি বেচাকেনার পদ্ধতিতে এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে বিক্রয়ের মাধ্যমেই।

দেশের প্রপার্টি মার্কেট
মানুষের দৈনন্দিন জীবনের মৌলিক চাহিদার মধ্যে আবাসনের স্থান অপরিহার্য। বাংলাদেশের প্রপার্টি মার্কেট চাহিদা ও সুযোগের সঙ্গে সমৃদ্ধ হচ্ছে। আবাসন খাতে ব্যবসায়ীরা (বিল্ডার ও ডেভেলপার) আধুনিক জীবনধারার চাহিদা মেটাতে কাজ করছেন।

অন্য যে কোনো খাতের মতো আবাসন খাতও বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। লকডাউনের কারণে কাঁচামালের অভাব, নির্মাণের সীমাবদ্ধতা এবং গ্রাহকদের অভাব দেখা দিয়েছে। কিন্তু এ বাধাগুলো সত্ত্বেও খাতটি ধীরে ধীরে গতি পেতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা নতুন পদ্ধতি নিয়ে আসেন এবং পরিস্থিতির রোডব্লক এড়িয়ে নতুন রাস্তা খুঁজে বের করেন।

বিশ্বজুড়ে জটিল পরিস্থিতির কারণে প্রায় সব দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ জটিলতাগুলো সব ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে ব্যবসায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি কাঁচামালের উৎস পাওয়া কঠিন; তাই কাঁচামাল ও নির্মাণের খরচ বেড়েছে। বর্তমানে দেশের প্রপার্টি বাজারের বার্ষিক কেনাবেচার আনুমানিক আকার প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য। নগরায়ণ ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদাও বেড়েছে। এখন বছরে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার ফ্ল্যাটের চাহিদা রয়েছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের প্রপার্টি মার্কেট বাধা সত্ত্বেও বিকশিত হচ্ছে এবং বার্ষিক ১৫-১৭% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিক্রয় প্রপার্টি
বিক্রয় প্রপার্টি হলো আপনার পছন্দের প্রপার্টি কেনাবেচার জন্য সবচেয়ে বড় ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস। এখানে আকার, লোকেশন এবং মূল্য অনুসারে ক্রয় বা বিক্রির জন্য মানুষ তাদের পছন্দসই সম্পত্তি অনুসন্ধান করতে পারে। বিক্রয়ের প্রপার্টি ক্যাটাগরিতে প্রতি মাসে প্রায় তিন লাখেরও বেশি গ্রাহক ভিজিট করে থাকেন এবং এখানে মাসে ২০ হাজারেরও বেশি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। দেশজুড়ে প্রপার্টি কেনাবেচায় ইচ্ছুক ক্রেতা-বিক্রেতারা বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন পোস্ট ও ব্রাউজ করতে পারেন। বিক্রয় প্রপার্টির ক্যাটাগরিতে মাসে এক লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি আগ্রহী প্রপার্টি ক্রেতা রয়েছেন। ডেভেলপারের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়েছে এবং বিক্রেতার সংখ্যা তিন সহস্রাধিক।

বিক্রয়ের তথ্য অনুসারে, প্ল্যাটফর্মটিতে প্রতিটি বিজ্ঞাপনে প্রায় ২০ জনেরও বেশি ক্রেতা আগ্রহ প্রকাশ করেন। ক্রেতারা যেমন সফলতার সঙ্গে তাদের পছন্দের প্রপার্টি খুঁজে পেতে সফল হয়েছেন, তেমনি বিক্রেতারাও প্রপার্টি বিক্রিতে সক্ষম হয়েছেন। অনেক ডেভেলপার ও বিক্রেতা বিক্রয়ের মাধ্যমে তাদের নানা ধরনের প্রপার্টি বিক্রি করেছেন। বিক্রয়ের প্রপার্টি মেম্বার নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার, মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম খান বলেন, 'নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড বিক্রয়ের সঙ্গে প্রায় ৬ বছর ধরে কাজ করছে, বিক্রয় আমাদের জন্য একটি কার্যকর এবং পরীক্ষিত প্ল্যাটফর্ম। বিজ্ঞাপন দেওয়ার ৩ দিনের মধ্যেই প্রপার্টি বুকিং হয়েছে এমন দারুণ অভিজ্ঞতাও আমাদের রয়েছে।'

বিক্রয় ক্রেতা, বিক্রেতা, ডেভেলপার এবং ভাড়াটেদের প্রপার্টি সার্ভিসের মাধ্যমে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একত্র করছে। বিক্রয়ের প্রপার্টি ক্যাটাগরি দেশের অন্যতম ক্রমবর্ধনশীল প্রপার্টি প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে একটি। বিক্রয় সারাদেশে হাজারো বিক্রেতাকে যেমন জমি, ফ্ল্যাট এবং কমার্শিয়াল প্রপার্টি ন্যায্য দামে বিক্রি করতে সাহায্য করছে, তেমনি লাখো ক্রেতাকে পছন্দের প্রপার্টি সম্পর্কে জানতে সাহায্য করছে। আগ্রহী ক্রেতারা পছন্দের লোকেশন, দাম এবং সাইজ অনুযায়ী প্রপার্টি খুব সহজেই খুঁজে নিচ্ছেন। বিক্রেতা প্রতিযোগিতামূলক এবং বাস্তবসম্মত মূল্যে প্রপার্টির লোকেশন, ছবি এবং প্রপার্টি সম্পর্কিত অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যোগ করে বিক্রয়ে বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে পারেন। আগ্রহী ক্রেতা/ভাড়াটেরা সহজেই লোকেশন, প্রপার্টির ধরন, আকার, বাজেট, প্রপার্টির বর্তমান অবস্থা ইত্যাদির মাধ্যমে ফিল্টার করে তাদের পছন্দসই প্রপার্টি খুঁজে পেতে পারেন। পরবর্তী সময়ে ক্রেতারা চাইলে বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা করতে পারেন।

নগরায়ণের হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের আবাসন শিল্প পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন জীবনধারা উন্নত করতে কিংবা চাকরির জন্য শহরে বসবাস করতে আরও আগ্রহী। এর ফলে ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট এবং কনডোমিনিয়ামের মতো প্রপার্টির চাহিদা বেড়েছে। বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান জানাচ্ছে 'ফ্ল্যাট' শব্দটি বিক্রয়ে ২০২২ সালে প্রায় তিন লাখ বার সার্চ করা হয়েছে এবং 'ল্যান্ড' সার্চ করা হয়েছে দুই লাখ বার। বর্তমানে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে নির্মাণ খরচ বেড়েছে। এ কারণে নতুন ফ্ল্যাটের দাম ও ভাড়ার হারও বেড়েছে; যা লক্ষ্য করা যায় বিক্রয় ওয়েবসাইটে 'ব্যবহূত ফ্ল্যাট' শব্দটির এক লাখ বার সার্চে। এর সঙ্গে সাইটের ভিজিটররা 'ফ্ল্যাট ভাড়া' ৯০ হাজার বার এবং 'বাড়ি' ৮০ হাজার বার সার্চ করেছেন।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, দেশের প্রপার্টি ল্যান্ডস্কেপে বিক্রয় অপরিহার্য। এক দশক আগেও একটি ভালো মূল্যের জন্য একটি পছন্দের স্থানে আপনার পছন্দের একটি প্রপার্টি খুঁজে পাওয়া ছিল কঠিন। তবে প্রযুক্তি মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রা এবং কেনাবেচার প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়েছে। গত এক দশক ধরে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে মানুষের জীবনকে সহজতর করতে বিক্রয় সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে। বিক্রয় তাদের ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে বিক্রেতা এবং ক্রেতা উভয়ের জন্য সমাধান দেয়। বিক্রয়ের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের যে কোনো লোকেশন থেকে ক্রেতারা ভালো মূল্যে, হাজারো প্রপার্টি ব্রাউজ করার সুযোগ পান এবং বিক্রেতারা যে কোনো প্রপার্টির বিজ্ঞাপন দেশজুড়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন। তাই দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে প্রপার্টি কেনাবেচা করতে ঢুঁ মারুন বিক্রয় ঠিকানায়।

বিক্রয় সম্পর্কে মজার তথ্য
বিক্রয়ে প্রতি মাসে যে পরিমাণ ফ্ল্যাট কেনাবেচা হয়, সেগুলো একসঙ্গে যোগ করলে দেশে ২টি বুর্জ খলিফা বানানো যাবে।