দম্পতিকে মেরে রক্তাক্ত করে ২২ হাজার টাকা ছিনতাই ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থীর নামে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে ভুক্তভোগী দম্পতির মামা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের মুখ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোতালেব বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর ১৩।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম তাজওয়ার জয় ও তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. সাজিদ আহম্মেদ। দুজনই সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। এর মধ্যে ফাহিম তাজওয়ার জয় ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী আর অন্যদিকে মো. সাজিদ হোসেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

মো. আব্দুল মোতালেব সমকালকে বলেন, ‘আমার বাসা শহীদ মিনারের পাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায়। সেদিন আমার ভাগ্নী ও তার স্বামী চকবাজার থেকে আমার বাসায় আসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে শহীদ মিনারে পৌঁছালে অভিযুক্তরাসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন তাদের ঘিরে ধরে এবং তাদেরকে ইচ্ছামতো মারধর করে সঙ্গে থাকা ২২ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর ব্যাংকের এটিএম কার্ড নিয়ে পাসওয়ার্ড চায়, না দিতে চাইলে পুনরায় মারে। এর ফাঁকে ভাগ্নী আমাকে ফোন করে, তখন আমার ছেলে মো. মেহেরাব এবং আমি দৌঁড়ে যাই। তারা তো কোন কথাই শোনে না। অনবরত গালাগালির একপর্যায়ে আমার গায়েও হাত তোলে। একপর্যায়ে ফাহিম তাজওয়ার জয় হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমার ছেলে ও ভাগ্নী জামাইকে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। ভাগ্নীকে হেনস্থা করে। পরে প্রক্টরিয়াল টিম আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এরকম ঘটনা আর দেখিনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি অবহিত হয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনায় আমরা জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলি। আমরা পুলিশকে বলেছি, তাদের যেন গ্রেপ্তার করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, ‘মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’