চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় খালাস পেয়েছেন ছয় কনস্টেবল। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিনের আদালত এ রায় দেন। 

খালাস পাওয়া ৬ পুলিশ সদস্য হলেন, কনস্টেবল আবদুল নবী, এসকান্দর হোসেন, মনিরুল ইসলাম, শাকিল খান, মো. মাসুদ ও মোর্শেদ বিল্লাহ। কনস্টেবল মোর্শেদ বিল্লাহ তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার সালেহ মো. তানভীরের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ভুক্তভোগীকে আসামিরা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে আদালতে বাদী ও সাক্ষীরা এমন কোন সাক্ষ্য দেননি। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।  

জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চারটি মোটরসাইকেলে আটজন আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব বৈরাগ গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. আবদুল মান্নানের বাড়িতে যান। ডিবি পরিচয়ে তাকে একটি মোটরসাইকেলে তুলে পটিয়া উপজেলার ভেল্লাপাড়া ব্রিজের কৈয়গ্রাম রাস্তার মাথায় একটি চা দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে মান্নানকে তারা জানায়, তার বিরুদ্ধে ডিবিতে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে হলে তাদের ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। রাতভর দর কষাকষির পর ভোরে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে এক লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা তাদের হাতে তুলে দেন মান্নান। এরপর তারা ওই ব্যবসায়ীকে সেখানে রেখে চলে যায় বলে মামলার এজাহার ও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। 

এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য পরিচয়ে অপহরণ এবং মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী আবদুল মান্নান। মামলার তদন্তে ঘটনার সঙ্গে ছয় পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় পুলিশ। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা তখন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) স্পেশাল আর্ম ফোর্স (এসএএফ) শাখায় কর্মরত ছিলেন। পরে সিএমপির সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করে আনোয়ারা থানা পুলিশ। সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।