ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলের দক্ষিণ ভবনের সিট দখল নিয়ে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের মধ্যে সোমবার রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হল প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শয়নের অনুসারীদের সম্মিলিত গ্রুপ এবং ঢাবি সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় মূল ভবনে হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।

এফএইচ হলের শিক্ষার্থীরা জানান, দক্ষিণ ভবনে সৈকতের অনুসারী বেশি। তাঁরা অন্য গ্রুপের নেতাকর্মীর কক্ষে গিয়ে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি ও শিক্ষার্থী তুলে দিয়ে আসছেন। এরই জেরে বাকি তিন গ্রুপের অনুসারীরা মিলে সোমবার রাতে ৫০০৬ নম্বর কক্ষ থেকে সৈকতের কর্মী সাব্বির রহমান অনিককে বের করে দেন। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীকে নিয়ে হলের নিচে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

হল ছাত্রলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম জানান, বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে তিনি 'হাঁস পার্টি' করেন। রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ করে তাঁর কক্ষে হামলা হয়। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জানিয়েছি।

সৈকতের অনুসারী হল ছাত্রলীগ নেতা সানজিদ হোসেন বলেন, ৫০০৬ নম্বর কক্ষে এসে প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে ঝামেলা করে। আমাদের ছেলেরা গেলে তাঁদের আহত করা হয়। সমাধানের চেষ্টা করলেও তাঁরা আমাদের বিছানাপত্র ফেলে দেন। বহিরাগত এনে হামলা করেন। অন্যদিকে, সাদ্দাম ও ইনানের অনুসারী হল ছাত্রলীগের নেতা জাহিদ হাসান রুবেল এবং রবিউল ইসলাম রবি বলেন, সৈকতের অনুসারীরা বিভিন্ন কক্ষ থেকে আমাদের ছেলেদের নামিয়ে দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে হামলা করা হয়।

সৈকত বলেন, কে, কার অনুসারী- এসব দেখা হবে না। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান জানান, রাতে সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে

ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিভাজনের রাজনীতি সহ্য করা হবে না। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুম জানান, আবাসিক শিক্ষক আব্দুল কাদিরকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।