স্ত্রীকে নিয়ে ভিক্ষা করেন অন্ধ আব্দুল আলী। বসবাস করেন অন্যের ঘরে। অথচ আশ্রয়ণের একটি ঘরও জোটেনি তাঁদের কপালে। শুধু তাই নয়, পাচ্ছেন না সরকারি কোনো ভাতাও। তাঁর বাড়ি নান্দাইল উপজেলার বাহের বানাইল গ্রামে।

জানা গেছে, অন্ধ আব্দুল আলী পৈতৃক সূত্রে যেটুকু জমি পেয়েছিলেন তা ধরে রাখতে পারেননি। এখন মাত্র পাঁচ শতক জমি রয়েছে। কোনো ছেলেসন্তান নেই যে তাঁর ভরণপোষণ করবে। একমাত্র মেয়ে ফাতেমাকেও বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগে।

আব্দুল আলী প্রায় দুই দশক আগে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন। এতে হারিয়ে যায় তাঁর দুটি চোখের দৃষ্টিশক্তি। তখন থেকে মানুষের কাছে হাত পেতেই চলছে তাঁর খাওয়া-পরা। পাঁচ শতক জমি থাকলেও টাকাপয়সার অভাবে ঘর নির্মাণ করতে পারছেন না। বসবাস করছেন তাঁর ভাই মোহাম্মদ আলীর ভাঙা ঘরে।

একে তো কোনো ঘর নেই, তার ওপর অন্ধ হয়ে যাওয়ায় আগের স্ত্রী তাঁকে ফেলে চলে যান। পরে বিয়ে করেন আমেনা বেগমকে। স্ত্রী আমেনাই এখন অন্ধ আব্দুল আলীর একমাত্র হাতের লাঠি। যেখানে যান স্ত্রীর কাঁধে হাত রেখেই মানুষের কাছে সাহায্যের হাত পাতেন। এত কিছুর পরও প্রতিবন্ধী ভাতা পাননি তিনি। অনেক আবেদন এবং দৌড়াদৌড়ি করেও পাননি একটি সরকারি ঘর। জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কম থাকায় পান না কোনো বয়স্ক ভাতাও। এমনকি করোনার সময়ও মেলেনি সহায়তা।

সম্প্রতি আব্দুল আলীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ভাতিজা আব্দুল জলিল তাঁর বসতঘরটি দেখিয়ে দেন। কাছে গিয়ে দেখা যায়, দোচালা ঘরটির টিনের চালা একেবারে ঝাঁঝরা। সেটিতেই স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি।

চণ্ডীপাশা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা কেন আব্দুল আলীকে কোনো সহায়তা দেননি তা তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। এখন সুযোগ এলে তাঁকে যথাসাধ্য সহায়তার চেষ্টা করা হবে।