অধ্যাপক কবীর চৌধুরী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অগ্রগণ্য লেখক। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে সরব ছিলেন তিনি। অপশক্তি রুখে দিতে অণুপ্রেরণার প্রতীক এই অধ্যাপক কর্মেই চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিশিষ্টজন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ আয়োজন করে। সভায় 'মুক্তিযুদ্ধের অভিঘাত :নাটক' শীর্ষক অধ্যাপক কবীর চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা দেন আরণ্যক নাট্যদলের সভাপতি মামুনুর রশীদ।

নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সভায় আরও বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দে, সুরের ধারার সভাপতি সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রমুখ।

সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, তখন বিভিন্ন সময়ে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আস্টম্ফালনের বিরুদ্ধে আমরা কবীর চৌধুরীর শূন্যতা বেশি করে অনুভব করি। তাঁর অনুপস্থিতিতে আমাদেরই এদের শক্ত হাতে রুখতে হবে।

নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, কবীর চৌধুরী হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছিলেন এবং ছাত্রদের অধিকার আদায় আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন। রামেন্দু মজুমদার বলেন, কবীর চৌধুরীর জীবন ও কর্ম থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী কবীর চৌধুরীর জীবনী পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।

শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, বর্তমানে মৌলবাদীদের আস্টম্ফালনে কবীর চৌধুরীর শূন্যতা বারবার মনে করিয়ে দেয়। মিলন কান্তি দে বলেন, ধর্মান্ধতার কালো ছায়া দূর করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, বহুবার কবীর চৌধুরীকে মুরতাদ, কাফের আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব কখনও তাঁকে আন্দোলন থেকে বিযুক্ত করতে পারেনি। সভায় কবীর চৌধুরীর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে সাইফউদ্দিন রুবেল পরিচালিত প্রামাণ্যচিত্র 'নাই বা হলো পারে যাওয়া' প্রদর্শন করা হয়।