- বাংলাদেশ
- রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর দুই মনোনয়ন জমা
রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর দুই মনোনয়ন জমা

নির্বাচন কমিশনে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও ওবায়দুল কাদের। ছবি-সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম জানান, রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুটি আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়েছে একই ব্যক্তির নামে।
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আজকে ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুটি মনোনয়ন দাখিল হয়েছে একই ব্যক্তির নামে। যার নামে দাখিল হয়েছে তিনি মো. সাহাবুদ্দিন। পিতা মরহুম শরফুদ্দিন আনসারী। বাসা হোল্ডিং ৮৮/১ গ্রাম রাস্তা শিবরামপুর পাবনা। পোস্ট কোড ৬৬০০ পাবনা।
নির্বাচন কমিশন সচিব জানান, মনোনয়নপত্র প্রস্তাবকারীর নাম হচ্ছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদের এবং সমর্থনকারীর নাম হচ্ছে চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাছান মাহমুদ।
তিনি জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচনী কর্তার দপ্তরে দুটি আবেদনের মধ্যে একটি সকাল ১১টা এবং অন্যটি সকাল ১১টা ৫ মিনিটে জমা দেওয়া হয়েছে। এই দুটি আবেদন সোমবার দুপুর একটায় হতে বাছাই করা হবে। বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পর আগামীকাল প্রধান নির্বাচনী কর্তা অবহিত করবেন। দুটি মনোনয়পত্রেরই প্রস্তাবক ও সমর্থক একই ব্যক্তি, একই নামে।
একক প্রার্থী হলে তার প্রক্রিয়া কি হবে জানতে চাইলে সচিব বলেন, আগামীকাল বাছাইয়ের পরে বৈধ মনোনয়ন যেটা হবে তার নাম ঘোষণা করা হবে। আইনানুগভাবে প্রত্যাহারের শেষ তারিখে আমরা চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করব কে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তবে যেহেতু একই ব্যক্তির দুটো আবেদন এবং দুটি যদি বাছাইয়ে টিকে তবে কালকেই এটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
তিনি জানান, একই ব্যক্তি তিনটি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন, যেখানে প্রস্তাবক ও সমর্থক ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে একই ব্যক্তির দুটি জমা পড়েছে। একই পদে একাধিক প্রার্থী থাকলে তখন এক ব্যক্তি দুজনের প্রস্তাবক হতে পারে না। একজন প্রার্থীর দুটি আবেদন দেওয়া হয়েছে।
ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখ ভোটের দিন রেখে গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগ্রহী প্রার্থীরা ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রার্থীর সংখ্যা একজনের বেশি না হলে তাকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী না থাকায় সংসদ অধিবেশন কক্ষে ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না।
সেক্ষেত্রে মঙ্গলবারই বৈধ মনোনয়নপত্র হওয়ার পর প্রত্যাহারের দিন চূড়ান্ত ঘোষণা করা হতে পারে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। যিনি এ নির্বাচনের ‘নির্বাচনী কর্তা’।
সোমবার সকাল থেকে নির্বাচন কমিশন নতুন রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমার নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। সকাল সোয়া ৯টার দিকে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম নির্বাচন ভবনে এসে সরাসরি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচনী কর্তার কক্ষে খোঁজ নেন। একে একে নির্বাচন কমিশনাররাও ইসিতে আসতে থাকে। সোয়া দশটার দিকে সিইসি আসেন নির্বাচন ভবনে। নির্বাচন কমিশনাররাও সিইসির সঙ্গে আলাপ করতে আসেন। পরে তিনি নির্বাচনী কর্তার নির্ধারিত কক্ষের নির্দিষ্ট আসনে অপেক্ষা করেন। সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে বেলা ১১টার আগে আওয়ামী লীগের প্রধান হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী ও দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এসে নির্বাচনী কর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল আসেন; সঙ্গে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন।
এসময় তাকে সবাই ঘিরে ধরে এগিয়ে নিয়ে আসেন। স্মিত হাস্যে মো. সাহাবুদ্দিন জানান দিচ্ছেন তিনিই প্রার্থী। নির্বাচন ভবনের চার তলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে প্রার্থীকে নিয়ে বসেন আওয়ামী লীগ নেতারা। সঙ্গে মনোনয়নপত্র নেওয়া হয় এ কক্ষে।
রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেন প্রার্থী। এসময় গণমাধ্যমের চাপ থাকলেও কাউকে প্রবেশ কক্ষে দেওয়া হচ্ছিল না; তখনই অনেকটা তাকে ঘিরে প্রটোকল দেখা যায়।
এরই মধ্যে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র নিয়ে নির্বাচনী কর্তার কাছে জমা দেওয়া হয়। মনোনয়নপত্র জমার সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকসহ প্রতিনিধি দলের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
পরে সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে গণমাধ্যমের কাছে নতুন রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর পরিচিতি তুলে ধরেন। পরে প্রার্থীসহ দল বের হয়ে যান। গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিক্রিয়া জানতে নির্বাচন ভবনের নিচে মো. সাহাবুদ্দিন শুধু একটি বাক্যই বলেন, সবই সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছা।
মন্তব্য করুন