
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালী বাঁধ হবে কিনা- এ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমের সামনে দু'পক্ষ ভিন্নমত দিয়েছে। এক পক্ষ বলছে, বাঁধ হলে কয়েকটি হাওর ও পরিবেশের ক্ষতি হবে, বাধাগ্রস্ত হবে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ। তবে আরেক পক্ষ বলছে, বাঁধ না হলে টাঙ্গুয়ার হাওরের ফসলের ক্ষতি হবে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে জানান উপমন্ত্রী।
জেলা হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিং কমিটি, জনপ্রতিনিধি, কৃষক নেতা ও গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে এ সভা করেন উপমন্ত্রী। সেখানে নজরখালী বাঁধের প্রসঙ্গ ওঠে। সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ রামসার সাইট, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত নয়। এ জন্য এবার বাঁধের কাজ হবে না।
পরে কেন্দ্রীয় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে ফসলি জমি কম। গত বছর এক্সক্যাভেটর ঢুকিয়ে কাজ করায় পরিবেশ কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নজরখালিতে বাঁধ না হলে আশপাশের বড় হাওরগুলো নিরাপদ থাকে। এ জন্য জেলা কমিটির সভায় বাঁধ না করার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছিল।
এক পর্যায়ে গণমাধ্যম কর্মীদের মত জানতে চান উপমন্ত্রী। তখন তাঁরা বলেন, মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশের তাহিরপুরের বৌলাই নদী দিয়ে ঢল নেমে বড় ফসলি হাওর শনি ও মাটিয়ানকে ঝুঁকিতে ফেলে। নজরখালী খালের মুখ খোলা থাকলে পানি টাঙ্গুয়ার হাওরে ঢোকে। এতে অন্য হাওরে পানির চাপ কমে। নজরখালী বাঁধ দিতে আইনি বাধাও আছে।
বাঁধ হলে এক পক্ষের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে।
তবে এসব বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান মধ্যনগরের দক্ষিণ বংশিকুণ্ডা ইউনিয়নের রনশির বাসিন্দা জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম। নজরখালিতে বাঁধ না হলে ৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল ডুববে দাবি করে তিনি বলেন, জরুরি বরাদ্দ দিয়ে বাঁধের কাজ করতে হবে। এ সময় দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরপাড়ের রতনশ্রী গ্রামের কৃষক হোসেন মিয়া বলেন, নজরখালিতে বাঁধ না হলে ঢলের পানি ভাটির দিকে চলে যাবে। টাঙ্গুয়ার হাওরে পানি ঢুকলে শনি ও মাটিয়ান হাওরের বাঁধে চাপ পড়ে না। একই গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া বলেন, নজরখালী দিয়ে পানি টাঙ্গুয়ার হাওর হয়ে মধ্যনগরের উত্তর-দক্ষিণ বংশিকুণ্ডা যেতে ছয়-সাত দিন লাগে। ততক্ষণে ফসল ঘরে তুলতে পারেন কৃষক।
তবে রামসিংহপুরের কৃষক তারা মিয়া বলেন, নজরখালিতে বাঁধ দেওয়া প্রয়োজন। গুরামা এক্সটেনশনের বাঁধের কাজও করতে হবে। তা না হলে এক্সটেনশনের প্রায় দুই হাজার হেক্টর ও টাঙ্গুয়ার হাওরের মধ্যনগর এলাকার কিছু ফসল অকাল বন্যায় ডুবে যেতে পারে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, মাটিয়ান হাওরে ফসলি জমি ২ হাজার ৬০০ হেক্টর। শনির হাওরে আট হাজার ও হালির হাওরে আছে চার হাজার ৫২০ হেক্টর। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালিতে ২৫ হেক্টর জমি রয়েছে। মধ্যনগরের উত্তর-দক্ষিণ বংশীকুণ্ডা ও গুরমার এক্সটেনশন মিলিয়ে জমি ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর। নজরখালী দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকলে উত্তর-দক্ষিণ বংশিকুণ্ডার ফসল ডুবতে চার থেকে পাঁচ দিন লাগবে। হাওরের ফসল কীভাবে রক্ষা পাবে, সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ড ভালো বুঝবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন প্রকৌশলী বলেন, নজরখালী ও গুরমার এক্সটেনশনের বাঁধ অনেক চেষ্টা করেও গত বছর রক্ষা করা যায়নি। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি, নাওটানা ও গনিয়াকুড়ির বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় নেই। কৃষকদের দাবির মুখে গত বছর ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তবে কাজে লাগেনি। পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকেছে। সবার মনোযোগ সেখানে থাকায় অন্য কয়েকটি হাওরে ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ করার বিষয়ে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। এ জন্য বিষয়টি চূড়ান্ত করা যায়নি। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও পাউবোর ডিজি আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জে এসে বাঁধ হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, নজরখালী বাঁধের বিষয়ে উপমন্ত্রী কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, সরকারের সব কাজ মানুষের মঙ্গল চিন্তা করে করা হয়। নজরখালী বাঁধে সরেজমিন গিয়েছেন। সুনামগঞ্জের সব পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। সংশ্নিষ্ট বিশেজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ৭ মার্চের মধ্যে নির্মাণাধীন সব হাওরের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
জেলা হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিং কমিটি, জনপ্রতিনিধি, কৃষক নেতা ও গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে এ সভা করেন উপমন্ত্রী। সেখানে নজরখালী বাঁধের প্রসঙ্গ ওঠে। সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ রামসার সাইট, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত নয়। এ জন্য এবার বাঁধের কাজ হবে না।
পরে কেন্দ্রীয় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে ফসলি জমি কম। গত বছর এক্সক্যাভেটর ঢুকিয়ে কাজ করায় পরিবেশ কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নজরখালিতে বাঁধ না হলে আশপাশের বড় হাওরগুলো নিরাপদ থাকে। এ জন্য জেলা কমিটির সভায় বাঁধ না করার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছিল।
এক পর্যায়ে গণমাধ্যম কর্মীদের মত জানতে চান উপমন্ত্রী। তখন তাঁরা বলেন, মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশের তাহিরপুরের বৌলাই নদী দিয়ে ঢল নেমে বড় ফসলি হাওর শনি ও মাটিয়ানকে ঝুঁকিতে ফেলে। নজরখালী খালের মুখ খোলা থাকলে পানি টাঙ্গুয়ার হাওরে ঢোকে। এতে অন্য হাওরে পানির চাপ কমে। নজরখালী বাঁধ দিতে আইনি বাধাও আছে।
বাঁধ হলে এক পক্ষের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে।
তবে এসব বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান মধ্যনগরের দক্ষিণ বংশিকুণ্ডা ইউনিয়নের রনশির বাসিন্দা জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম। নজরখালিতে বাঁধ না হলে ৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল ডুববে দাবি করে তিনি বলেন, জরুরি বরাদ্দ দিয়ে বাঁধের কাজ করতে হবে। এ সময় দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরপাড়ের রতনশ্রী গ্রামের কৃষক হোসেন মিয়া বলেন, নজরখালিতে বাঁধ না হলে ঢলের পানি ভাটির দিকে চলে যাবে। টাঙ্গুয়ার হাওরে পানি ঢুকলে শনি ও মাটিয়ান হাওরের বাঁধে চাপ পড়ে না। একই গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া বলেন, নজরখালী দিয়ে পানি টাঙ্গুয়ার হাওর হয়ে মধ্যনগরের উত্তর-দক্ষিণ বংশিকুণ্ডা যেতে ছয়-সাত দিন লাগে। ততক্ষণে ফসল ঘরে তুলতে পারেন কৃষক।
তবে রামসিংহপুরের কৃষক তারা মিয়া বলেন, নজরখালিতে বাঁধ দেওয়া প্রয়োজন। গুরামা এক্সটেনশনের বাঁধের কাজও করতে হবে। তা না হলে এক্সটেনশনের প্রায় দুই হাজার হেক্টর ও টাঙ্গুয়ার হাওরের মধ্যনগর এলাকার কিছু ফসল অকাল বন্যায় ডুবে যেতে পারে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, মাটিয়ান হাওরে ফসলি জমি ২ হাজার ৬০০ হেক্টর। শনির হাওরে আট হাজার ও হালির হাওরে আছে চার হাজার ৫২০ হেক্টর। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালিতে ২৫ হেক্টর জমি রয়েছে। মধ্যনগরের উত্তর-দক্ষিণ বংশীকুণ্ডা ও গুরমার এক্সটেনশন মিলিয়ে জমি ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর। নজরখালী দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকলে উত্তর-দক্ষিণ বংশিকুণ্ডার ফসল ডুবতে চার থেকে পাঁচ দিন লাগবে। হাওরের ফসল কীভাবে রক্ষা পাবে, সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ড ভালো বুঝবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন প্রকৌশলী বলেন, নজরখালী ও গুরমার এক্সটেনশনের বাঁধ অনেক চেষ্টা করেও গত বছর রক্ষা করা যায়নি। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি, নাওটানা ও গনিয়াকুড়ির বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় নেই। কৃষকদের দাবির মুখে গত বছর ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তবে কাজে লাগেনি। পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকেছে। সবার মনোযোগ সেখানে থাকায় অন্য কয়েকটি হাওরে ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ করার বিষয়ে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। এ জন্য বিষয়টি চূড়ান্ত করা যায়নি। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও পাউবোর ডিজি আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জে এসে বাঁধ হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, নজরখালী বাঁধের বিষয়ে উপমন্ত্রী কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, সরকারের সব কাজ মানুষের মঙ্গল চিন্তা করে করা হয়। নজরখালী বাঁধে সরেজমিন গিয়েছেন। সুনামগঞ্জের সব পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। সংশ্নিষ্ট বিশেজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ৭ মার্চের মধ্যে নির্মাণাধীন সব হাওরের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন