সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কাজের মান ও ধরন আন্তর্জাতিকভাবে নতুন ও ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি করেছে। বিচারে স্বচ্ছতা, মান রক্ষা ও আন্তর্জাতিক আইন বিজ্ঞান মেনে দেওয়া রায়গুলো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শুক্রবার খুলনা জেলা একাডেমি মিলনায়তনে 'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: জেনোসাইড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার' শীর্ষক নবম শহীদ স্মৃতি স্মারক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ক অসহায়ের মতো বয়ে বেড়িয়েছে কয়েক যুগ। এ সুযোগে এক সময় অনেক শীর্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তি রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসিত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার হয়েছেন। অসাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থার সুযোগে এই অভিযুক্তদের পুনর্বাসিত করা হয়েছিল। এমন বিলম্ব কোনো অপরাধীর দায় কমায় না বা তাকে কোনো দায়মুক্তিও দেয় না- এটি আজ আইনিভাবে প্রতিষ্ঠিত।

সভাপতির বক্তব্যে দুই বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণহত্যা জাদুঘরের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, তাঁরা এই মানবতাবিরোধী বিচারের কাজ দীর্ঘদিন ধরে যথাযথভাবে করেছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যাদের তাঁরা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন, তাদের অনেককে আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু সেগুলোর এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। আপিলের বিষয়গুলো নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। কারণ বিচার শেষ না হলে শহীদ ও ভুক্তভোগীরা বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শহীদেরও অধিকার আছে। সেটা রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। স্বাগত বক্তব্য দেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি কবি তারিক সুজাত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাদুঘরের ট্রাস্টি সম্পাদক ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।

স্মারক বক্তৃতাটি গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বই 'বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ'-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আলোচনা সভায় খুলনা শহরের গবেষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।