আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে খুলনা নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি। প্রথম প্রহরে ও ভোরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়েও অনেকে শহিদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

খুলনা জেলা প্রশাসন বিকেল ৪টায় বিভাগীয় গণ-গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে অমর একুশের বইমেলার মঞ্চে বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করে। শহীদ হাদিস পার্কে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করা হয়।

খুলনা সিটি করপোরেশন সকাল ৯টায় নগর ভবনে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম। পরে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সকাল ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার অধ্যাপক অমিত রায় চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুবেল আনছার।

এর আগে সকাল সাড়ে ৬টায় প্রশাসন ভবনের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ, উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রভাতফেরি করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর উপাচার্য শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনে মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টারের ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও প্রশাসন ভবন সংলগ্ন মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শহীদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্বালন, বিকাল ৪টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কর্মসূচির মধ্যে ছিল পুষ্পমাল্য অর্পণ, সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের অংশগ্রহণে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, আসরবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল। এসব কর্মসূচিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সকাল সাড়ে ৭টায় দলীয় কার্যালয় থেকে প্রভাত ফেরি এবং প্রভাত ফেরি শেষে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ সকাল ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে আলাদাভাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি সকাল সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে ভাষা শহীদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এ কর্মসূচিতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান উপস্থিত ছিলেন।